হাজির: জোধপুর আদালতে নীলম, সইফ আলি খান এবং তব্বু। বৃহস্পতিবার। ছবি: এপি।
কুড়ি বছর লড়াইয়ের শেষে জয়। উৎসবে মেতে উঠেছেন জোধপুরের বিশ্নোই সম্প্রদায়। শুধু একটাই আফসোস তাঁদের, প্রমাণের অভাবে সলমন খানের সঙ্গীসাথীদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কৃষ্ণসার ও চিঙ্কারা হরিণ মারার মামলায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে একটানা লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিশ্নোই টাইগার ফোর্সের সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ বিশ্নোই বলেন, ‘‘এঁরা সকলে সলমনের গাড়িতেই ছিলেন। চিৎকার করে তাঁকে উৎসাহিত করছিলেন। তার পরেও আদালত তাঁদের ছাড় দেওয়ায় আমরা অবাক।’’
চিঙ্কারা হরিণ মারার অন্য একটি মামলায় ২০০৬-এ নিম্ন আদালত সলমন খানকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছর কারাবাসের সাজা দেওয়ার পরেও এ ভাবেই মেতে উঠেছিলেন ‘জঙ্গলের সন্তান’ হিসেবে পরিচিত বিশ্নোই সম্প্রদায়। সে বার জামিন পাওয়ার আগে এক মাস জেলও খাটতে হয় এই চিত্রতারকাকে। তার ১০ বছর পরে রাজস্থান হাইকোর্ট প্রমাণের অভাব দেখিয়ে সলমনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তুলে নিয়ে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার পরেও লড়াই ছাড়েননি বিশ্নোইরা। সুপ্রিম কোর্টে যায় বিশ্নোই টাইগার ফোর্স। সঙ্গে অন্য কয়েকটি সংগঠনও। খুব শীঘ্রই রায় হতে পারে সেই মামলার।
আরও পড়ুন:
সলমন নাকি হরিণকে জল দেন, বিস্কুটও!
এক বিশ্নোই নেতার দাবি, ‘‘আমাদের চোখের সামনে গুলি করে হরিণ মেরেছেন সলমন। আমরা বারণ করেছি, উনি তাতে কান দেননি।’’ তার পরেও প্রমাণের অভাবে কী করে উনি ছাড়া পান, সে প্রশ্ন তুলেছেন ওই নেতা।
সেই মামলার রায় বেরোনোর আগেই কৃষ্ণসার হরিণ মারার মামলায় জেল হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টেও সুবিচার পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন বিশ্নোইরা। শুধু হরিণই নয়, জঙ্গলের গাছ সংরক্ষণেও এই সম্প্রদায়ের লড়াই ইতিহাসে জায়গা পেয়েছে।
১৭৩০ সালে জঙ্গল বাঁচাতে মারওয়া রাজা অভয় সিংহের সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করেছিলেন বিশ্নোইরা। জঙ্গল কেটে সেখানে নতুন প্রাসাদ গড়তে চেয়েছিলেন রাজা। অমৃতা দেবীর নেতৃত্বে বিশ্নোইরা বাধা দিলে সেনারা তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৩৬৩ জন বিশ্নোই প্রাণ দেন। শেষ পর্যন্ত প্রাসাদ নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিলই করতে হয় রাজাকে।
এ বারেও কোমর বেঁধেছেন বিশ্নোইরা। তাঁদের কথায়, সময় লাগলে লাগুক। শেষ দেখে ছাড়বেন।