প্রতীকী ছবি।
শীর্ষ আদালতের চার বিচারপতির শূন্য পদ পূরণের প্রক্রিয়া বন্ধ রাখল পাঁচ শীর্ষ বিচারপতির কলেজিয়াম। ফলে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম আর ওই চার শূন্য পদ পূরণে পদক্ষেপ করবে না। ৯ নভেম্বর অবসর নেবেন প্রধান বিচারপতি ললিত। তার পর নয়া প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
গত কাল কলেজিয়ামে গৃহীত প্রস্তাব থেকে জানা গিয়েছে, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি পদে নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট বিচারপতির দেওয়া রায় খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন কলেজিয়ামের সদস্যেরা। সেইসঙ্গে তাঁদের যোগ্যতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ওই যোগ্যতা নির্ধারণের মাপকাঠি কী, তা স্পষ্ট নয়। এমন পদক্ষেপ এই প্রথম বলে জানিয়েছে কলেজিয়াম।
শীর্ষ আদালতে বিচারপতির চার শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দিন ধরেই টানাপড়েন চলছে কলেজিয়ামের সদস্যদের মধ্যে। গত কাল কলেজিয়ামে গৃহীত প্রস্তাবে স্পষ্টই জানানো হয়েছে, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি পদে নাম সুপারিশের জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর কলেজিয়ামের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ১১টি নাম বিবেচনা করা হয়েছিল। বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নাম সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়। বাকি ১০ জনের নাম নিয়ে বৈঠক ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, হাই কোর্টের যে সব বিচারপতির নাম বিবেচনা করা হচ্ছে তাঁদের আরও কয়েকটি রায় খতিয়ে দেখতে চান কলেজিয়ামের কয়েক জন সদস্য। ২৬ সেপ্টেম্বরের বৈঠকেই প্রথম সংশ্লিষ্ট বিচারপতিদের রায় খতিয়ে দেখে যুক্তিসম্মত ভাবে বিচার করার পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে কলেজিয়াম।
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের অনুপস্থিতির ফলে ৩০ সেপ্টেম্বরের বৈঠক হয়নি। কলেজিয়াম গত কাল গৃহীত প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, এর পরে কলেজিয়ামের বাকি চার সদস্যকে ফাইল পাঠিয়ে চারটি শূন্য পদের জন্য নামে সম্মতি চান প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত। কিন্তু এই পদ্ধতিতে বিচারপতিদের নাম সুপারিশ করায় আপত্তি জানান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এস আব্দুল নাজ়ির। তবে তাঁদের চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করা হয়নি বলে কলেজিয়ামের তরফে জানানো হয়েছে।
২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ললিত বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি নাজ়িরের আপত্তির কারণ ও বিকল্প উপায়ের কথা জানতে চান। কিন্তু তাঁরা জবাব দেননি। কলেজিয়ামের তরফে জানানো হয়েছে, ফলে বিচারপতিদের মধ্যে বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু এর মধ্যেই প্রধান বিচারপতি ললিতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। তাঁকে উত্তরসূরির নাম সুপারিশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। ৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন ললিত। কলেজিয়াম জানিয়েছে, ‘‘এই পরিস্থিতিতে ৩০ সেপ্টেম্বরের বৈঠকের অসমাপ্ত কাজ সম্পর্কে আর কোনও পদক্ষেপের প্রয়োজন নেই। এই বিষয়টি নিয়ে আর কোনও আলোচনারও প্রয়োজন নেই।’’