Mamata Banerjee-PM Narendra Modi

অন্য অনেকের মতো নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করছেন না মমতা, ‘সঠিক নীতি’, বলছেন মোদীর মন্ত্রী

মমতার এ বারের দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাদা ভাবে কোনও বৈঠক হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও মমতার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে মোদী সরকারের এক শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৩
Share:

(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের মোট সাত জন মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকার মনে করছে, তৃণমূল নেতৃত্ব বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনার অভিযোগ তুললেও মমতা যে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের মতো নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করছেন না, সেটাই ‘সঠিক নীতি’।

Advertisement

মমতার এ বারের দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলাদা ভাবে কোনও বৈঠক হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও মমতার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আজ মোদী সরকারের এক শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর যদি কেন্দ্রের প্রতি আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ থাকে, তা হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক টেবিলে বসে রাজ্যের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে নীতি আয়োগের বৈঠকই সেরা মঞ্চ।”

মোদী সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে শনিবার প্রথম বার নীতি আয়োগের প্রথম পরিচালন পরিষদের বৈঠক বসতে চলেছে। বৈঠকে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও মঙ্গলবারের বাজেটের পরে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কংগ্রেস শাসিত তিন রাজ্য কর্নাটক, তেলঙ্গানা ও হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন না। কংগ্রেসের অভিযোগ, বাজেটে শুধু মাত্র এনডিএ-র শরিক নির্ভরতার কথা মাথায় রেখে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ অর্থসাহায্য রয়েছে। বাকি সব রাজ্য বঞ্চিত। কংগ্রেসের মতো তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, পঞ্জাবের আম আদমি পার্টি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করছেন। কেরলের বাম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বৈঠকে যোগ দেবেন না। যার অর্থ, ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের মোট সাত মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের দলগুলির মধ্যে একমাত্র মমতাই বৈঠকে যোগ দেবেন।

Advertisement

আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছেন। কিন্তু এই বৈষম্যের প্রশ্নে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কংগ্রেস যদি বাকি সবার সঙ্গে কথা বলে নিত, তা হলে ভাল হত বলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন। সে ক্ষেত্রে মিলিত ভাবে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট হতে পারত। তৃণমূল সূত্রের যুক্তি, বাকিদের সঙ্গে কথা না বলে কংগ্রেস আগে ভাগেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছে। এটা জোটধর্মের পরিপন্থী। বাজেটের আগেই মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। তাই তিনি দিল্লি সফর বাতিল করছেন না। এই সফরে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে যেমন প্রধানমন্ত্রীর আলাদা কোনও বৈঠক নেই, তেমনই সনিয়া বা রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও পৃথক ভাবে বৈঠক নির্ধারিত নেই। তবে তিনি শুক্রবার সংসদে যেতে পারেন। সেখানে কারও সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে আলাদা কথা।

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “কোনও মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রের দিক থেকে বঞ্চনার অভিযোগ থাকলে তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে এসে তা নিয়ে সরব হতে পারতেন। কারণ ওই বৈঠকে শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। রাজ্যের দাবিদাওয়া জানানোর জন্য এর থেকে ভাল সুযোগ আর কোথায় মিলবে? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।” তাঁর যুক্তি, বাজেটে আলাদা ভাবে বিহার, অন্ধ্রের কিছু প্রকল্পের নাম উল্লেখ হলেও সব রাজ্যের জন্যই সব প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। বাকি রাজ্যের নাম উচ্চারিত হয়নি বলে বাজেটে ওই সব রাজ্যের জন্য কোনও টাকাই নেই, এটা মিথ্যা প্রচার বলেও তাঁর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement