নতুন বছরে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতির লক্ষ্যে মরিয়া হয়ে মাঠে নামছে কেন্দ্র। যে ভাবে কূটনৈতিক ক্যালেন্ডার তৈরি হচ্ছে তাতে এই বছরে অন্তত তিন বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর। চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে এই বছরেই চিনের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে আসেন। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, সীমান্ত নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছেই। কিন্তু তা নিয়ে তিক্ততা যেন দু’দেশের বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তার জন্য ধারাবাহিক ভাবে আলোচনার টেবিলে বসাটা জরুরি। আর সেই লক্ষ্যেই এ বার সক্রিয় হতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
আগামী জুনে চিনের পূর্ব প্রান্ত কিনদাও-এ বসছে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন। যাওয়ার কথা রয়েছে মোদীর। এখন পর্যন্ত স্থির রয়েছে, সম্মেলনের ফাঁকে তিনি চিনফিং-এর সঙ্গে পার্শ্ববৈঠকে বসবেন। এই বছরই আর্জেন্টিনায় জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বৈঠক হওয়ার কথা। এর পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসছে ব্রিকস সম্মেলন। দু’টি সম্মেলনেই ভারত-চিন শীর্ষবৈঠক হওয়ার কথা। ২০১৮-র শেষ দিকে চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং-কেও দ্বিপাক্ষিক সফরে ভারতে আনার জন্য চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে সাউথ ব্লক। শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াও গোটা বছর যাতে দু’দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ের যোগাযোগ ধারাবাহিক ভাবে বজায় থাকে, তার জন্যও চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে। জুন মাসে মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ব্যাঙ্ক’-এর ‘বোর্ড অব গভনর্স’-এর বৈঠক। সেই সময়েও চিনের কূটনৈতিক কর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বাণিজ্য-আলোচনা হবে। এই সংগঠনটি চিনের মস্তিষ্কপ্রসূত। এর সদস্য এখন ৫০টি দেশ।
আরও পড়ুন: অনুমতি মিলল না জিগ্নেশের সভারও
নয়াদিল্লির দ্বিতীয় প্রয়াস, যেন ফের ডোকলাম-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে দিকে সতর্ক নজর রাখা। তবে চিনকে চাপে রাখতে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে অক্ষ তৈরি করা, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চর্তুদেশীয় জোট গড়ার মত প্রক্রিয়াগুলি ভারত চালাতেই থাকবে। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, চিনের সঙ্গে দৌত্য বাড়ানো মানে এলাকায় নিজেদের অবস্থানকে লঘু করা নয়। কিন্তু সরাসরি ড্রাগনের সঙ্গে সংঘাতকে যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করা হবে।
যেমন সম্প্রতি অরুণাচলপ্রদেশের আপার সিয়াং জেলায় ভারতের ভিতরে প্রায় ৬০০ মিটার ঢুকে চিনের রাস্তা তৈরি করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই বিষয়টিকে নিয়ে উত্তাপ বাড়তে দিতে চায়নি নয়াদিল্লি। ভারত এবং চিনা সেনার ব্রিগেডিয়ারদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘সামান্য বিবাদ’ হয়েছিল। তা আবার মিটেও গিয়েছে।