Education

কনফুসিয়াস কেন্দ্র গড়ার চিনা প্রকল্প বন্ধ করল কেন্দ্র

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যায়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সশস্ত্র লাল ফৌজের সাম্প্রতিক আগ্রাসন চিনের সম্প্রসারণবাদের দিকটিকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এটাই সব নয়।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি

শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র খোলার মাধ্যমে অন্য দেশে নিজেদের রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক প্রচার চালাচ্ছে বেজিং। তাই বন্ধ করে দেওয়া হল সে ধরনের বেশ কিছু যৌথ প্রকল্প। বিশ্বজোড়া চিন-বিরোধী অবস্থানের সঙ্গে এ বার যুক্ত হল ভারতও। কূটনৈতিক সূত্রে এই খবর মিলেছে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যায়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সশস্ত্র লাল ফৌজের সাম্প্রতিক আগ্রাসন চিনের সম্প্রসারণবাদের দিকটিকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এটাই সব নয়। তার অন্য একটি ‘মধু মাখানো’ দিকও রয়েছে যা নিয়ে এত দিন গা করেনি কেন্দ্র। সেটি হল, তাদের সংস্কৃতি, আদর্শ, এবং মতবাদের দিকটিকে (সফট পাওয়ার) প্রতিবেশী দেশে প্রচার করা। কূটনীতিকদের মতে, এটি তাদের বাণিজ্যিক আগ্রাসনেরই পরোক্ষ কৌশল। অন্যান্য দেশে চিনা সংস্কৃতির ‘অনুপ্রবেশ’ ঘটিয়ে ধীরে ধীরে তাদের বাজারের মনস্তত্ত্বকে কিনে নেওয়া যার উদ্দেশ্য।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বিষয়টি নিয়ে গালওয়ান কাণ্ডের পর চোখ খুলেছে নয়াদিল্লির। ভারতের অগ্রগণ্য সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাটছড়া বেঁধে সাতটি কনফুসিয়াস কেন্দ্র গড়ার কথা ছিল বেজিংয়ের। আপাতত পুর্নবিবেচনার জন্য সেগুলি স্থগিত রেখেছে সরকার। চিনের সঙ্গে ভারতের বড় মাপের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে ৫৪টি চুক্তিপত্র সই হয়েছিল, সেগুলির বাস্তবায়নও বন্ধ রাখা হচ্ছে।

Advertisement

এর আগেই নতুন শিক্ষানীতিতে সেকেন্ডারি স্তরে বিদেশি ভাষা শিক্ষার তালিকায় ম্যান্ডারিনকে বাদ দিয়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে যে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে একটি ভাষা শিক্ষার সুযোগ থেকে কেন বঞ্চিত হবে শিক্ষার্থীরা? সম্পর্ক মেরামতির কারণেও এই ভাষা শেখাটা জরুরি।

কেন্দ্রীয় সূত্রের বক্তব্য, প্রয়োজনে সেনা কর্তাদের বা রাষ্ট্রদূতদের ম্যান্ডারিন শিখে নেওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। তা তাঁরা শিখে নেনও। যেমন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিনা ভাষায় সড়গড়। কিন্তু চিনের সঙ্গে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাদের কোনও কাজই সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা যাবে না— এমনটাই স্থির হয়েছে। বলা হচ্ছে যে কনফুসিয়াস সেন্টারের মোড়কে আসলে চিন তাদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রভাব বাড়ানোর কাজ করে এসেছে অনেক দেশে। গোটা বিশ্বেই চিন সংস্কৃতি প্রচারের এই চেষ্টা সমালোচনার মুখে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়াও তদন্ত শুরু করেছে, চিনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে চুক্তিতে আইনভঙ্গ হয়েছে কি না। আমেরিকা এবং ব্রিটেন-সহ বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিনের এই কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির বক্তব্য অনুযায়ী বা চিনা প্রতিষ্ঠানটি বেজিং-এর সফট পাওয়ার প্রচারের জন্যই তৈরি করা হয়েছে এই সেন্টার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement