ছেলে কালো, কনে ছাদনাতলা থেকেই পালাল

শুভদৃষ্টি হবে তখন। ঘোমটা তুলে হবু বরের দিকে তাকিয়েই আক্কেল গুড়ুম কনের। ‘এত কালো ছেলেকে বিয়ে করব না’— বলেই সটান ছাদনাতলা থেকে পালালেন ওই তরুণী!

Advertisement

দিবাকর রায়

পটনা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

মনমরা: উপহার ফিরিয়ে দিচ্ছেন ইন্দল কুমার। সমস্তীপুরে।— নিজস্ব চিত্র।

শুভদৃষ্টি হবে তখন। ঘোমটা তুলে হবু বরের দিকে তাকিয়েই আক্কেল গুড়ুম কনের। ‘এত কালো ছেলেকে বিয়ে করব না’— বলেই সটান ছাদনাতলা থেকে পালালেন ওই তরুণী!

Advertisement

এমন কাণ্ডে হতভম্ব বিহারের বেগুসরাইয়ের সালোনা গ্রামের ইন্দল কুমার।

বিয়ে ঠিক হয়েছিল কয়েক দিন আগে। পাত্রী সমস্তীপুরের রোসড়ার সিংহমা গ্রামের কুমকুম কুমারী। উৎসবের আমেজ ছড়ায় দুই পরিবারে। গত কাল সন্ধেয় ইন্দলকে নিয়ে নাচতে নাচতে কনের বাড়ি পৌঁছন বরযাত্রীরা। সেজেগুজে তৈরি ছিলেন কুমকুমও।

Advertisement

গণ্ডগোলের শুরু এর পরেই।

কনেকে বিয়ের মণ্ডপে নিয়ে আসতে বলেন পুরোহিত। শুভদৃষ্টি, মালাবদল হবে। মেয়ের পরিজনরা ছাদনাতলায় নিয়ে যান কুমকুমকে। মুখ ঢাকা ঘোমটায়। হবু বরকে দেখতে ঘোমটা তুলেই চটে লাল কুমকুম। চিৎকার জুড়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘কী কালো ছেলেরে বাবা। ওকে

আমি কিছুতেই বিয়ে করব না।’’ কারও কথা না শুনেই বিয়ের মণ্ডপ থেকে চলে যান ওই তরুণী।

মেয়ের বাড়ির সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয় বরযাত্রীদের। কিছু ক্ষণ চুপচাপ বসেছিলেন ইন্দল। কনেপক্ষের লোকেদের ডেকে তিনি বলেন, ‘‘ওকে একটু বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে আসুন না।’’ লাভ হয়নি তাতে। দু’পক্ষে হাতাহাতির উপক্রম হয়। বরযাত্রীদের আটকে দেন এলাকাবাসী। আজ সকালে পণের টাকা, উপহার নিয়ে সমস্তীপুরে পৌঁছন বরের কয়েক জন আত্মীয়-বন্ধু। সব জিনিস ফেরত পেয়ে বরযাত্রীদের রেহাই দেন কুমকুমের পরিজনরা।

প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ইন্দল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কালো। এতে আমার কী দোষ? আগেই বলতে পারত বিয়ে করবে না। এক বাড়ি লোকের সামনে এ ভাবে অপমান করার মানেটা কী?’’ তবে এ সব নিয়ে থানায় নালিশ ঠোকার কথা ভাবছেন না বিয়ে ভেঙে যাওয়া ছেলের পরিবার।

সিংহমার গ্রামপ্রধান সুভাষ ঠাকুর বলছেন, ‘‘সবই শুনেছি। কিন্তু মেয়ে যদি বিয়ে না করতে চায়, তা হলে কিছুই করার নেই।’’

ইন্দল এখন শুধু বলছেন, ‘‘অনেক হয়েছে, জীবনে আর কোনও দিন ছাদনাতলায় বসব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement