প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির প্রতি কেন দলিতদের ‘মোহভঙ্গ’ হল, তার কারণ খুঁজতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এল সন্তোষ শনিবার লখনউয়ে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রবিবার তিনি রাজ্য বিজেপির তফসিলি জাতি বিভাগের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেসের জোটের তুলনায় এ বার যে শুধু বিজেপির আসন কমেছে, তা নয়। দলিত বা তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনেও বিজেপির শক্তি কমেছে। উত্তরপ্রদেশে তফসিলি জাতি বা এসসি-র সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ১৭টি। ২০১৪-র লোকসভায় বিজেপি এর সব ক’টি জিতেছিল। ২০১৯-এ জিতেছিল ১৪টি। এ বার সেখানে বিজেপি মাত্র ৮টি আসন জিতেছে।
বিজেপির এত দিনের দাবি ছিল, মায়াবতীর দলিত ভোটব্যাঙ্কের মধ্যে তাঁর নিজস্ব জাটভ সম্প্রদায় ছাড়াও বাকি দলিত সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে। কিন্তু এ বার নরেন্দ্র মোদী চারশো পার করে ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দেবেন বলে বিরোধীদের প্রচারে দলিতদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে বলে বিজেপি নেতারা মনে করছেন। সমাজবাদী পার্টি সংরক্ষিত লোকসভা কেন্দ্রের ৮টি জিতে নিয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে একটি। তার পরেই বিজেপির অন্দরে বিপদঘন্টি বেজে উঠেছে। বিজেপি মনে করছে, মায়াবতীর জাটভ সম্প্রদায়ের একাংশও এ বার অখিলেশকে ভোট দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে যাদব ও জাটভ এক বাক্সে কখনও ভোট দিত না। অখিলেশ এ বার সেই অসাধ্য সাধন করেছেন।
বি এল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠকে বিজেপির দলিত নেতাদের পাশাপাশি দলিত সমাজের কিছু প্রতিনিধিকেও ডাকা হয়েছিল। সূত্রের খবর, দলিত নেতারা জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে সরকারি ক্ষেত্রের অনেক কাজ বেসরকারি সংস্থাকে ঠিকা দিয়ে করানো হচ্ছে। ফলে সরকারি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ কমে বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ বাড়ছে। কিন্তু সেখানে সংরক্ষণের সুবিধা নেই। ফলে দলিত, অনগ্রসরদের মধ্যে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস এ নিয়ে প্রচার করেছে।
লোকসভা ভোটের পরে উত্তরপ্রদেশে ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। তা নিয়েও বিজেপির দুশ্চিন্তা রয়েছে। এই ১০ আসনে বিজেপি খারাপ ফল করলে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের জন্য ভুল বার্তা যাবে। তাই এখন থেকেই তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সন্তোষ।