আগামী রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হবে। —ফাইল চিত্র।
ঠিক এই মুহূর্তে বরষা জাগ্রত দ্বারে বলা না-গেলেও অনতিদূরেই তার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে হাওয়ামোরগের আশ্বাস। গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষার সেই আগমনি শুনিয়ে আলিপুর আবহাওয়া দফতর বুধবার জানিয়েছে, আগামী রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হবে। তার ফলে বর্ষা অবশেষে ঢুকতে পারে পূর্ব ভারতে। আর পূর্ব ভারতে পদার্পণের সূত্রেই গাঙ্গেয় বঙ্গে আগমন ঘটতে পারে তার। তবে ঠিক কোন দিনে কোন ক্ষণে বর্ষা দক্ষিণবঙ্গে পা ফেলবে, এ দিনেও সেটা নিশ্চিত করে বলা হয়নি।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৮ থেকে ২১ জুনের মধ্যে গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষার আগমনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে। পরিস্থিতির অগ্রগতি বিচার করে এই ব্যাপারে পরবর্তী ঘোষণা করা হবে। তবে ১৭ জুন পর্যন্ত বর্ষা আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।’’
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে বলছেন, আষাঢ়ের প্রথম দিনটাও তা হলে বর্ষাহীন হয়েই কাটবে দক্ষিণবঙ্গের। উত্তরবঙ্গে অবশ্য বেশির ভাগ জায়গাতেই মৌসুমি বায়ু পৌঁছে গিয়েছে। বর্ষার আপাতত যা মতিগতি, তা দেখে অনেকের অনুমান, আগামী সোম ও মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রাক্-বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ওই বৃষ্টি আদতে বর্ষার বর্ষণ নয়, বর্ষার পদধ্বনি। তেমন ঘটলে বুধবার বর্ষা ঢুকে পড়েছে বলে ঘোষণা করা হতে পারে। বর্ষার আগমন ত্বরান্বিত করতে পারে, বঙ্গোপসাগরে এমন কোনও নিম্নচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাসও এ দিন মেলেনি।
চিরাচরিত নির্ঘণ্ট মানলে গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষার পৌঁছে যাওয়ার কথা ১০-১১ জুন। কিন্তু এ বার এখনও পর্যন্ত বর্ষার যা মতিগতি, তাতে সেই হিসেবে তার ৯-১০ দিন দেরি হতে পারে। অনেকেই বলছেন, কয়েক বছর আগে ১৭-১৮ জুন বর্ষা এসেছিল গাঙ্গেয় বঙ্গে। এ বার মৌসুমি বায়ু তার থেকেও বেশি দেরি করবে। বর্ষার এই বিলম্বের দরুন জুনে গাঙ্গেয় বঙ্গে বড় মাপের বর্ষণ-ঘাটতিও হতে পারে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় বঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা থাকছে আগামী শনিবার পর্যন্ত। উপকূলীবর্তী জেলাগুলিতে দিনভর ঘামের অস্বস্তিও অব্যাহত থাকবে। এ দিনেও পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরে তাপপ্রবাহ বয়েছে। পুরুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতেও গরমের দাপট ছিল। হাওড়ার উলুবেড়িয়া এবং হুগলির মগরায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি। বর্ষার প্রাক্কালে দফায় দফায় এমন তাপপ্রবাহ অতীতে দেখা গিয়েছে কি না, সেই বিষয়েও চর্চা শুরু হয়েছে আবহবিদদের শিবিরে।