—প্রতীকী চিত্র।
দক্ষিণ ভারতের পর এ বার পূর্ব ও পশ্চিম ভারতেও প্রভাব বাড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। নিশানায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বুধবার সংসদে এ কথা জানানো হয়েছে।
বছর খানেক আগে সিরিয়ায় মার্কিন সেনার হাতে মারা যায় আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। বাগদাদি নিহত হওয়ায় আইএসের সংগঠনে বিরাট ধাক্কা এলেও ভারতীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের ভাবধারা গোটা পৃথিবীর মতো ভারতেও ছড়িয়ে দিতে তৎপর রয়েছে ওই জঙ্গি গোষ্ঠী। দেশে আইএস কতটা শিকড় ছড়িয়েছে, তা নিয়ে আজ একটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিষেণ রেড্ডি জানান, এই মুহূর্তে কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় আইএস। ওই রাজ্যগুলি থেকে ১২২ জনকে আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। তিনি আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরেও আইএস প্রভাব বাড়াচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে পরে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে আইএসের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণেও আইএসের সম্পর্ক ছিল বলেও জানতে পেরেছে এনআইএ। ওই হামলার তদন্তে জানা যায়, ভারতে ও বাংলাদেশে আইএসের কার্যকলাপ ছড়িয়ে দিতে বাংলা ভাষাতে প্ররোচনা দেওয়ার কাজ চলছে। গত বছর আইএসের একটি ওয়েবসাইটে বাংলায় পোস্টার দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়, ‘আমরা আসছি। সাবধান।’ বাংলাতে আইএস দাবি করে, ভারতে ধর্মীয় রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তারা ভারতে একটি বিশেষ প্রদেশ গঠন করেছে বলেও দাবি করে। গত মাসে আফগানিস্তানের জালালাবাদে জেল ভেঙে সঙ্গীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় আইএস। ভারতেও এ ধাঁচের হামলা হতে পারে বলে সে সময়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে দেয় কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত নিতিন গডকড়ী, টুইট করে জানালেন নিজেই
আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসায় চার্জশিট পুলিশের, ১৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে নেই উমর, শরজিলের নাম
পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক সোশ্যাল সাইটের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যার মাধ্যমে আইএসের ভাবধারা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এলাকায় বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ যুবকদের বিপথে টেনে আনার চেষ্টা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, ধর্মের শাসন প্রতিষ্ঠার নামে বাছাই করে মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। ভারতের ধর্মীয় অসন্তোষের ঘটনা, ভূয়ো সংঘর্ষের ছবি দেখিয়ে এদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে সন্ত্রাসের রাস্তায়। একক ভাবে সন্ত্রাস চালাতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। কেবলমাত্র নিরক্ষর বা স্বল্প শিক্ষিতেরাই নয়, কৈখালির ইঞ্জিনিয়ার যুবকও যে ভাবে এদের ফাঁদে পা দিয়েছেন, তাতে গোয়েন্দাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।