নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই মহারাষ্ট্রে শাসক জোট ‘মহাজুটি’র মধ্যে বিরোধ ক্রমশ বাড়ছে। তিন দলের নেতারাই একে অন্যের বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে আঙুল তুলতে শুরু করেছেন। ফলে জোটের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্পের আদলে মহারাষ্ট্রেও গত মাসে ‘লড়কি বহিন যোজনা’ চালু হয়। এই প্রকল্পের কৃতিত্ব নিয়ে ইতিমধ্যেই জোটের অন্দরে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনার শিন্দে গোষ্ঠীর নেতা একনাথ শিন্দে শিবির বিষয়টি নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করলেও এই প্রকল্প নিয়ে পদযাত্রা করে এবং একটি বারের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি নেতারা বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাও ভাগীদার। দু’পক্ষের এই তিক্ততার মধ্যেই শিন্দে-শিবিরের প্রবীণ নেতা রামদাস কদম সরাসরি বিজেপি নেতা তথা পূর্ত মন্ত্রী রবীন্দ্র চহ্বাণের পদত্যাগ দাবি করায় প্রবল ক্ষিপ্ত উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির ভারপ্রাপ্ত নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস। তিনি সরাসরি শিন্দের কাছে কদমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি তুললেও কিছুই হয়নি। শিন্দে শিবিরের নেতারা অবশ্য এতেও থামছেন না। শিন্দের ঘনিষ্ঠ নেতা তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী তানাজি সাবন্ত সরাসরিই বলেছেন, অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে দলের জোটের কথা মনে হলেই তাঁর বমি পায়! তানাজির এ হেন মন্তব্যে বিস্তর চটেছে অজিত গোষ্ঠী।
এই তিক্ততার মধ্যেই ছত্রপতি শিবাজির মূর্তি ভাঙার ঘটনা জোটের অন্দরে আগুন জ্বালিয়েছে। অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর নেতা তথা বিধান পরিষদের সদস্য অমোল মিতকারি সরাসরি মূর্তির ভাস্কর জয়দীপ আপ্টের দিকে আঙুল তুলেছেন। এই জয়দীপ আবার একনাথ শিন্দের ছেলের অতি-ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। ফলে ফের অজিত বনাম একনাথ গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়েছে।
এমনিতেই লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-উদ্ধবের শিবসেনা এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি-কে নিয়ে গড়া ‘মহা বিকাশ আঘাড়ী’ (এমভিএ) জোটের কাছে বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি-শিন্দে-অজিতের ‘মহাজুটি’। তার পর থেকেই শাসক জোটের মধ্যে গোলমাল বাড়ছে। সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনায় ফাটল আরও চওড়া হওয়ায় উল্লসিত বিরোধী এমভিএ। তবে এখনই বিষয়টি নিয়ে বেশি হইচই করতে চাইছেন না তাঁরা। বরং বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতা দ্রুত সেরে ফেলে প্রচারে নামতে চাইছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এমভিএ জোটের অন্যতম শরিক তথা প্রবীণ এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারকে জ়েড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। তবে শরদ ওই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে জানা গিয়েছে।