প্রতীকী ছবি।
মেয়েটি হিন্দু পরিবারের। ছেলেটি মুসলিম। ধর্মের গণ্ডি বাধ মানেনি তাঁদের ভালবাসায়। কিন্তু তথাকথিত ধর্মের ধ্বজাধারীদের হাত থেকে বাঁচতে বছর বাইশের কোমল এবং বছর চব্বিশের সলমনকে শরণাপন্ন হতে হল আদালতের। বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে কোমলদের বাঁচাতে তাঁদের অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।
আরও পড়ুন- ফের গোরক্ষকদের তাণ্ডব, স্কুটারে মাংস পেয়ে বেধড়ক মার সব্জি বিক্রেতাকে
ঘটনাটা উত্তরপ্রদেশের পিচকৌরা গ্রামের। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গ্রামেই বছর বাইশের কোমলের প্রতিবেশী ২৪ বছরের সলমন। তিনি দিন মজুরের কাজ করেন। দু’জনের সম্পর্কের কথা আঁচ করে তড়িঘড়ি কোমলের বিয়ে ঠিক করে ফেলে তাঁর পরিবার। এর পরই গত ২৫ জুন তাঁরা এক সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। দিন দু’য়েকের মধ্যেই তাঁদের খুঁজে বার করে কোমলের পরিবারের লোকজন। কোমল দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে সলমনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই কথা শুনেই অশান্তি শুরু হয় কোমলের পরিবারে। হিন্দু মেয়ের মুসলিম ছেলকে বিয়ে করার খবরে বিক্ষোভ শুরু হয় কোমলদের গ্রামেও। পুলিশি নিরাপত্তায় সোমবার দু’জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় আদালতে। আদালতেও নিজেদের বিয়ের কথা স্বীকার করেন কোমল।
ঘটনার কথা জানতে পেয়ে গ্রামে উপস্থিত হন স্থানীয় আরএসএস এবং হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমর্থকেরা। কোমলকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে গ্রামে মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়। সলমনের বিরুদ্ধে কোমলকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরণের অভিযোগ তোলা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, কোমল ফিরে আসার পরেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন সলমনের পরিবারের লোকজন। গ্রামের প্রধান হাজি ফারমান আলি জানান, আদালতের শুনানি শুরু হওয়ার পরেই বাইরে থেকে হিন্দু সংগঠনগুলির সদস্যেরা গ্রামে আসতে শুরু করে। সেই কারণেই ভয় পেয়ে সলমনের বাবা, চার কাকা-সহ পরিবারের ২৪ জন সদস্য গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন।
অভিযোগ, শুনানি চলাকালীন আদালতের বাইরে জড়ো হতে থাকেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা। তাদের হাত থেকে বাঁচাতে কোমলদের অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।