কবি ও গায়ক গদর। ছবি সংগৃহীত।
তেলঙ্গানার গণসঙ্গীত শিল্পী, লোকগায়ক, কবি এবং নকশালপন্থী রাজনীতির প্রাক্তন সাংস্কৃতিক মুখ গদর ওরফে গুম্মাডি ভিত্তল রাও প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। গত ২০ জুলাই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বাইপাস সার্জারি হয়। রবিবার হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
‘জনগণের গায়ক’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন গদর। কণ্ঠ এবং নিজস্ব গায়কীতে অসামান্য ছিলেন। একই সঙ্গে গোটা শরীর দিয়ে তাঁর সাঙ্গীতিক উপস্থাপনাও ছিল দেখার মতো। গানের সুবাদে নিজের রাজ্য ছাড়িয়ে ভারত জুড়ে খ্যাতি ছড়িয়েছিল তাঁর। কলকাতাতেও একাধিক বার গাইতে এসেছেন। গেয়েছেন শহিদ মিনারে নকশালপন্থীদের সমাবেশেও।
জীবনের বড় সময়টাই তিনি জড়িয়ে ছিলেন নকশালপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে। তবে ২০১০ সালের পর থেকে তাঁর সঙ্গে ওই রাজনীতির দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল তাঁর। আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন গদর। তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের পর, ২০১৮ সালে ভোট বয়কটের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক লাইন থেকে সরে এসে প্রথম বার ভোট দেন তিনি।
বর্তমান তেলঙ্গানার মেডক জেলার তুপরানে জন্ম গদরের। অল্প বয়স থেকেই বিভিন্ন গণ আন্দোলন এবং পরবর্তী কালে নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। আশির দশকে সিপিআই (এমএল) জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করতেন গদর। পরবর্তীতে এই গোষ্ঠী নতুন সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-তে মিশে যায়। জঙ্গলে আত্মগোপন করেও কাটিয়েছেন একটা পর্ব।
১৯৯৭ সালে নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হন গদর। তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছিল। গুরুতর ভাবে আহত হলেও, শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যান।
সম্প্রতি তাঁকে দেখা গিয়েছিল খাম্মামে তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেসের সভায়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধীও। সভায় গদরকে জড়িয়ে ধরেন রাহুল। কয়েক মাস আগে নতুন দল তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন গদর। কিন্তু তার আগেই জীবনাবসান হল তাঁর।
গদরের মত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাহুল। শোক প্রকাশ করেছেন তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু, বিজেপির তেলঙ্গানা রাজ্য সভাপতি জি কিসান রেড্ডি-সহ আরও অনেকে।