সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ। —ফাইল চিত্র।
সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদের জামিনের আর্জির বিরুদ্ধে গুজরাত হাই কোর্টে সওয়াল করল সে রাজ্যের সরকার। বুধবার হাই কোর্টে গুজরাত সরকারের কৌঁসুলি জানান, তিস্তাকে জামিন দেওয়া হলে তিনি প্রমাণ লোপাট করতে পারেন।
এর পাশাপাশি গুজরাত সরকারের তরফে আদালতে দাবি করা হয়, তিস্তা রাজনীতির বোড়ে হিসাবে গুজরাতের অসম্মান করেছেন। বুধবার গুজরাত সরকারের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী মিতেশ আমিন। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস নেতা (অধুনা প্রয়াত) আহমেদ পটেলের কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিস্তা। তাঁর বিনিময়ে নাকি তিনি ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার পর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন গুজরাতের বিজেপি সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিস্তার পাশাপাশি, রাজ্যের দুই প্রাক্তন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জানান সরকারি কৌঁসুলি। তিনি জানান, পুলিশ আধিকারিক আরবি শ্রীকুমার এবং সঞ্জীব ভট্ট ২০০২ সালে মোদী সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ করেছিলেন। তিস্তার সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক ছিল এবং তিনি সেই দলের হয়ে কাজ করতেন বলেও আদালতে দাবি করেছে গুজরাত সরকার। গত বছর জুলাই মাসে গুজরাতের একটি নিম্ন আদালতেও একই যুক্তি দেখিয়ে তিস্তার জামিনের বিরোধিতা করেছিল গুজরাত সরকার।
২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তিস্তাকে। গ্রেফতার হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পরে জামিন পান তিনি। সুপ্রিম কোর্ট গুজরাতের জঙ্গি দমন শাখার (এটিএস) হাতে ধৃত তিস্তার আবেদনে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাধিক মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। ঘটনাচক্রে, ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দীর্ঘ দিন রয়েছেন তিস্তা। ধারাবাহিক ভাবে ওই পরিবারগুলিকে আইনি সহায়তাও দিয়েছেন তিনি। গুজরাত পুলিশের জঙ্গিদমন শাখার (এটিএস) হাতে তিস্তার গ্রেফতারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জও।