স্কুল খোলার আগে সিদ্ধান্ত ফাইল চিত্র
স্কুল খুলে গিয়েছে হরিয়ানায়। সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি, গুজরাত-সহ বেশ কিছু রাজ্য। পুজোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে স্কুল খোলার কথা ভাবছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় সব রাজ্যই অন্তত দেড় বছর পরে স্কুল-কলেজ খোলার ইঙ্গিত দিতে শুরু করায়, এ বার শিক্ষকদের টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। ওই দিনের মধ্যে সমস্ত শিক্ষককে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিকল্পনা রূপায়ণে কেন্দ্রীয় সরকার বাড়তি দু’কোটি প্রতিষেধক বণ্টনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া বলেন, ‘‘রাজ্যগুলি যেমন প্রতিষেধক পায়, এই মাসেও তেমন সংখ্যক প্রতিষেধক তো পাবেই। উপরন্তু শিক্ষকদের জন্য ২ কোটি বাড়তি টিকা পাবে রাজ্যগুলি।’’ শিক্ষকদের টিকাকরণ ও স্কুল খোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন কোভিড টিকা সংক্রান্ত সরকারের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান এন কে অরোড়া। তাঁর মতে, ধাপে ধাপে স্কুল খোলার সময় এসেছে। তবে তার আগে পড়ুয়াদের বাবা-মা ও বাড়ির প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ জরুরি।
শিক্ষকদের টিকাকরণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, যে উঁচু শ্রেণিগুলি খোলার কথা ভাবা হয়েছে, সরকারের উচিত সেই শ্রেণির পড়ুয়াদের টিকাকরণ নিশ্চিত করা। না হলে সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হতে পারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, স্কুলগুলিতে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আগামী মাস থেকে উঁচু শ্রেণির পড়ুয়াদের টিকাকরণ শুরু করার কথা ভাবা হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সরকারের প্রধান লক্ষ্য, ধাপে ধাপে স্কুলে পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। প্রথম ধাপে নবম-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত খোলার কথা ভাবা হয়েছে। তার পরে ধীরে ধীরে নিচু শ্রেণিগুলি খোলার কথা ভাবছে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, স্কুল খোলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলিই নেবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্যে স্কুল খুলে গিয়েছে। আগামী মাস থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খুলতে চলেছে গুজরাত, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলিতে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বক্তব্য, শিক্ষকদের টিকাকরণ হয়ে গেলেই উঁচু শ্রেণির জন্য স্কুল এবং কলেজ খুলে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। ভারতে অন্তত ৮০ লক্ষের কাছাকাছি শিক্ষক রয়েছেন। অসম, পশ্চিমবঙ্গের মতো যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচন ছিল, সেখানে ভোটের দায়িত্ব পড়ায় অধিকাংশ শিক্ষকদের টিকাকরণ আগেই হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, এ ছাড়া বেশ কিছু রাজ্যে স্কুল খোলার জন্য ইতিমধ্যেই শিক্ষকদের টিকাকরণ সেরে ফেলেছে। তাই কেন্দ্র মনে করছে, আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সব শিক্ষককে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। পরবর্তী ধাপে স্কুলগুলির মাধ্যমে পড়ুয়াদের টিকা দেওয়ার কথা ভেবে রেখেছে কেন্দ্র।