গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ব্যাগে ৩৫ টাকা ছিল। খুঁজে পাচ্ছিলেন না শিক্ষিকা। তাঁর সন্দেহ, স্কুলের খুদেরাই কেউ ব্যাগ থেকে টাকা সরিয়ে থাকবে। তাই তাদের লাইন করে মন্দিরে নিয়ে গেলেন তিনি। ঈশ্বরের সামনে ‘দিব্যি’ করে ওই পড়ুয়াদের বলতে বললেন, যে তারা টাকা নেয়নি। পড়ুয়ারা ‘দিব্যি’ করে বললেই তিনি তাদের কথা বিশ্বাস করবেন বলে জানালেন।
ঘটনাটি বিহারের বাঁকা জেলার। স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ওই মহিলা। ৩৫ টাকা ‘চুরি’ যাওয়ায় ‘চোর’ ধরতে অভিনব উপায় অবলম্বন করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা আপত্তি করেন। সকলের অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁকে বদলি করে অন্য স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
গত বুধবার অন্যান্য দিনের মতোই স্কুলে গিয়েছিল পড়ুয়ারা। তাঁদের শিক্ষিকা নীতু কুমারী ক্লাসে এক জনকে বলেন, তাঁর ব্যাগ থেকে জলের বোতল এনে দিতে। জল খাওয়ার কিছু পরে ব্যাগ ঘেঁটে তিনি দেখতে পান, সেখানে ৩৫ টাকা নেই। টাকা কোথায় গেল, পড়ুয়াদের তা জিজ্ঞাসা করেন শিক্ষিকা। কেউ উত্তর দিতে পারেনি। এর পরেই কে টাকা সরিয়েছে, তা বোঝার জন্য শিক্ষিকা ক্লাসের সবাইকে নিকটবর্তী মন্দিরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের ঈশ্বরের সামনে ‘দিব্যি’ করে টাকা না নেওয়ার কথা বলতে বলা হয়।
সে দিন স্কুলে ১২২ জন পড়ুয়া উপস্থিত ছিল। নীতু ছাড়া আর কোনও শিক্ষিকা স্কুলে ছিলেন না। ওই স্কুলে মোট শিক্ষিকার সংখ্যা দুই।
পড়ুয়াদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে পরের দিন স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ব্লক এডুকেশন অফিসার বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ অনুচিত। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ওঁকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
অভিযুক্ত শিক্ষিকা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর যুক্তি, টাকার কথা জিজ্ঞেস করতে পড়ুয়ারা নিজে থেকেই ছুটে মন্দিরে চলে যায় এবং শপথ করে বলে তারা টাকা নেয়নি। গত ১৮ বছর ধরে ওই স্কুলে পড়াচ্ছিলেন নীতু। তাঁর বদলি হয়েছে।