(বাঁ দিকে) দিল্লি বিমানবন্দরের দুর্ঘনায় মৃত ট্যাক্সিচালক রমেশ কুমার। শোকস্তব্ধ পরিবার (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে তাদের পরিবার চলবে? কী ভাবেই বা দিদির বিয়ে হবে? এ কথা বলতে বলতে সমানে কেঁদে চলেছিল রবীন্দ্র। দিল্লি বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালের ছাদ ভেঙে যে ট্যাক্সিচালকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরই পুত্র সে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটিকে হারিয়ে দিশাহারা, ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছে গোটা পরিবার। শুক্রবার দিল্লির বিমানবন্দরের দুর্ঘটনায় মৃত্যু বছর পঁয়তাল্লিশের রমেশ কুমারের। টার্মিনালের ছাদে লোহার কাঠামোর নীচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
যাঁর কাঁধে ভর করে গোটা সংসার চলত, সেই মানুষটিকে হারিয়ে পরিবারের একটাই প্রশ্ন, “আমাদের কী হবে?” রমেশের দুই পুত্র এবং কন্যা। তাদের মধ্যে রবীন্দ্র বলে, “শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আমাদের কাছে একটি ফোন আসে। আমাদের জানানো হয়, বিমানবন্দরের কাছে বাবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তখনও আমাদের আসল ঘটনা জানানো হয়নি যে, বাবার মৃত্যু হয়েছে।”
রবীন্দ্রের দাবি, সেই ফোন পাওয়ার পর পড়িমরি করে বিমানবন্দরে পৌঁছয় তারা। পুলিশের কাছে বিষয়টি জানতে চায়। কিন্তু পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে এসে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বসিয়ে রাখে। তার কথায়, “তার পর আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনও আমাদের জানানো হয়নি যে, বাবা মারা গিয়েছেন। হাসপাতালে ২-৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করানোর পর বলা হয়, পর দিন এসে দেহ নিয়ে যেতে।” রবীন্দ্র জানান, এ কথা শোনার পর তাদের কারও বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে, এমন একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তার কথায়, “সামনেই দিদির বিয়ে। সব আয়োজন করছিল বাবা। কিন্তু তার মধ্যেই এই ঘটনা। এ বার আমাদের পরিবারের দেখাশোনা কে করবে? কে বিয়ে দেবে দিদিকে?”
বৃষ্টির জেরে শুক্রবার দিল্লি বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালের ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ট্যাক্সিচালক রমেশের। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ছ’জন।