নির্দল প্রার্থী থুলম সর্বানন।
ব্যবসায়ী নিকুঞ্জবাবু পরিচারকের অভাব মেটাতে ভাড়ায় এনেছিলেন রোবট অনুকূলকে। সত্যজিৎ রায়ের গল্পের মতো গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে না তামিলনাড়ুর মাদুরাই-দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোটারদের।
শুধু ভোটে জেতার অপেক্ষা। তার পরেই বাড়িতে বাড়িতে রোবট-ভৃত্য পৌঁছে দেবেন নির্দল প্রার্থী থুলম সর্বানন। করবেন, নিজের কেন্দ্রের ভোটদাতাদের বিনামূল্যে চন্দ্রযানে তোলার বন্দোবস্ত । এখানেই শেষ নয়। তাঁর ভোট-প্রতিশ্রুতির তালিকা আরও দীর্ঘ।
৩৪ বছরের থুলম জানিয়েছেন, নির্বাচনে জিতলে তাঁর কেন্দ্রের ভোটদাতাদের প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা দেবেন। কারও মেয়ের বিয়ে হলে যাবতীয় সোনাদানা কিনে দেবেন। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি হল প্রত্যেক পরিবারকে একটি ‘মিনি হেলিকপ্টার’ উপহার। পাশাপাশি, নৌকো, গাড়ি, আইফোন মায় সুইমিং পুল-সহ তিনতলা বাড়িও থাকবে উপহারের তালিকায়। সেই সঙ্গে গৃহবধূদের কাজের চাপ কমাতে দেবেন একটি করে রোবট তো রয়েছেই।
আর নিজের কেন্দ্রের জন্য কী করবেন? দক্ষিণ তামিলনাড়ুর প্রচণ্ড গরম থেকে মাদুরাইবাসীকে স্বস্তি দিতে একটি বরফ ঢাকা কৃত্রিম পাহাড় বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন থুলম। সেই সঙ্গে নিজের কেন্দ্রে একটি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র এবং রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ারও অঙ্গীকার করেছেন।
এ হেন থুলম কোনও কিন্তু বিত্তশালী শিল্পপতি নন, নেহাতই ছোট ব্যবসায়ী। এখনও বিয়ে করেননি। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা ও মা। এমনকি, মনোনয়নপত্র পেশের জন্য ২০ হাজার টাকা ধার করেই জোগাড় করেছেন বলে তাঁর দাবি। তা হলে এমন আকাশছোঁয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা হবে কী ভাবে? তাঁর জবাব, ‘‘জনসচেতনতা বাড়াতেই আমি এই কাজ করেছি। গত ৫০ বছরে নানা অবিশ্বাস্য প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তা পালিত হয়নি। তাই মানুষকে সজাগ করতেই এমন অবিশ্বাস্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’’
তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে অবশ্য গালভরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেওয়া (এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা পূরণের) পরম্পরা রয়েছে। অতীতে প্রয়াত নেত্রী জয়ললিতা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বাড়ি বাড়ি রঙিন টিভি পৌঁছে দিয়েছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী ডিএমকে শিবির দিয়েছে ল্যাপটপ। এবারও শাসকদল এডিএমকে বিনামূল্যে ওয়াশিং মেশিন, বছরে ছ’টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার এবং গৃহবধূদের মাসে দেড় হাজার টাকা ভাতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।