অর্থ ছড়িয়েও কি পঞ্জশির জিতল তালিবান! ছবি: টুইটার
একে একে এগিয়ে আসছেন ওঁরা। হাত পাতছেন। গুনে গুনে নোট তুলে দেওয়া হচ্ছে সেই হাতে। সেই নোট পকেটে ঢুকিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন ভাবলেশহীন মুখে। অথচ এই মুখেই এক সপ্তাহ আগে তালিবান বিরোধী স্লোগান উঠছিল। তালিব শাসনের বিরুদ্ধে আফগান প্রতিরোধের প্রতিনিধিও ছিলেন এঁরাই। মঙ্গলবার সেই তালিবানের কাছেই আত্মসমর্পণ করে ‘পুরস্কারের অর্থ’ বুঝে নিলেন পঞ্জশিরের যোদ্ধারা। অন্তত এমনটাই দাবি আফগানিস্তানের তালিবানপন্থী একটি টিভি চ্যানেলের। টাকা দেওয়া-নেওয়ার দৃশ্যের একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে তারা। বিবরণে জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী পঞ্জশির যোদ্ধাদের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে তালিবান।
ভিডিয়োটি নেটমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়েছে। যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি আফগানিস্তানের তালিবান বিরোধী প্রতিরোধ এ ভাবেই শেষ হল? পঞ্জশিরের মাটি বেচে দিলেন তার রক্ষকেরাই? জবাব এসেছে অন্য একটি সূত্র থেকে। আফগানিস্তানের আরও একটি টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, তালিবান বিরোধী বিদ্রোহের নেতা আহমেদ মাসুদ-সহ তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গীরা এখনও পঞ্জশিরেই রয়েছেন এবং তাঁরা তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই থামাবেন না। ফেসবুকে একটি অডিও বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন স্বয়ং মাসুদ। যদিও পুরো পঞ্জশির তালিবানের দখলে আসার পর মাসুদ কী ভাবে তাঁর লড়াই জারি রাখবেন, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি সেই বার্তায়। মাসুদের ভবিষ্যৎ নিয়েও আতঙ্কে রয়েছেন তাঁর শুভার্থীরা।
পঞ্জশিরের যোদ্ধাদের টাকা দেওয়ার ভিডিয়োটির পাশাপাশি মঙ্গলবার আরও বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে তালিবানপন্থী বখতার নিউজ এজেন্সি নামের ওই টিভি চ্যানেলটি। সেই সব ভিডিয়োর কোনওটিতে দেখা যাচ্ছে পঞ্জশিরের যোদ্ধাদের থেকে তালিবানের হাতে আসা বিপুল অস্ত্রের সংগ্রহ। কোনওটায় আবার ধরা পড়েছে আত্মসমর্পণের পর পঞ্জশিরের যোদ্ধাদের ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। এমনকি পঞ্জশিরের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তালিব নেতাদের কথাবার্তার একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে তারা। যেখানে সম্ভবত পঞ্জশিরের মানুষকে নির্ভয়ে থাকার কথা বলছেন এক তালিব নেতা।
গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখলের পর প্রায় গোটা আফগানিস্তান তালিবানের হাতে চলে এলেও পঞ্জশিরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে মাসুদের বাহিনী। তার পর থেকে গোটা বিশ্বেরই নজর ছিল পঞ্জশিরের দিকে। শেষে সোমবার তালিবান দাবি করে পঞ্জশিরের প্রতিরোধ ভাঙতে পেরেছে তারা।