দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে নড্ডা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
বিজেপির সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হল। দিল্লিতে দলের সদর দফতরে হাজির রয়েছেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীরা। তাঁদের উপস্থিতিতে সকাল ১০টা থেকে মনোনয়পত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। চলবে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর ফিরিয়ে নিতে চাইলে তা দেড়টা থেকে আড়াইটের মধ্যে সেরে ফেলতে হবে। তার পরই ভোটাভুটির মাধ্যমে সভাপতির নাম ঘোষণা হবে। তবে এ বারে সভাপতি হিসাবে দলের কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার নাম যেহেতু একরকম পাকাই হয়ে গিয়েছে, অন্য কারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারও সম্ভাবনা নেই, তাই ভোটাভুটি নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে সভাপতি হিসাবে সরাসরি নড্ডার নাম ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব মিটে গেলে এ দিন সভাপতি হিসাবে নড্ডার নাম প্রস্তাব করবেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ এবং নিতিন গডকড়ী। তাতে সমর্থন জানাবেন দলের জাতীয় পরিষদের সদস্যরা। নির্বাচন প্রক্রিয়া মিটে গেলে সদর দফতরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হওয়ার কথা। সেখানে নবনির্বাচিত সভাপতিকে অভিনন্দন জানাবেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহরা। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও, সেখানে বক্তৃতা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও উপস্থিত থাকবেন সেখানে।
তবে নড্ডাই যে পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনাথ সিংহ। সদর দফতরের বাইরে এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘জেপি নড্ডাজিই যে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হতে চলেছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত আমি।’’
আরও পড়ুন: নতুন বিজেপি সভাপতির নাম ঘোষণা আজই
ছাত্র জীবন থেকে সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নড্ডা। মোদী-শাহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত তিনি। তিন-তিন বার হিমাচলপ্রদেশের বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং বন, পরিবেশ ও বিজ্ঞান দফতরের দায়িত্বও সামলেছেন। ইউপিএ সরকারকে কোণঠাসা করতে ২০১০ থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১২-তে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের দায়িত্ব পান নড্ডা। ২০১৯-এর জুনে বিজেপির কার্যকরী সভাপতি নিযুক্ত হন।
আরও পড়ুন: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও লক্ষ্য বিভাজন
ওই জুনেই নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দলের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি চান বলে জানান অমিত শাহ। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও দলের দায়িত্ব সমালোনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। তখন থেকেই শাহের উত্তরসূরি হিসাবে জেপি নড্ডার নাম সামনে উঠে আসতে শুরু করে। তবে সভাপতি হিসাবে নড্ডার কাজটা যে সহজ হবে না, সে ব্যাপারে একমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। গত কয়েক বছরে হিন্দি বলয়ের একের পর এক রাজ্য এমনিতেই হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। সামনে আবার দিল্লির এবং বিহার বিধানসভা নির্বাচন। দিল্লিতে কেজরীবালের মোকাবিলা করার পাশাপাশি, বিহারে নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের সঙ্গে জোট টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সমালোচকদের একাংশের অবশ্য দাবি, নামেই সভাপতি হচ্ছেন নড্ডা। দলের আসল নিয়ন্ত্রণ থাকছে শাহের হাতেই। যদিও বিজেপি তা অস্বীকার করেছে।