গত সপ্তাহে বানভাসি দিল্লির একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
আবারও যমুনার জল বিপদসীমা ছাড়াল। রবিবার সকাল ৮টায় যমুনা নদীর জলস্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ২০৫.৯০ মিটার। সন্ধের মধ্যে এই উচ্চতা ২০৬ মিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। এই পরিস্থিতিতে পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে চাইছে দিল্লির আপ সরকার। হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড বাঁধ থেকে নতুন করে ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার কারণেই যমুনায় এই জলস্ফীতি বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবারই দিল্লির পূর্তমন্ত্রী তথা আপ নেত্রী আতিশি মারলেনা জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তাঁদের সরকার। কিছু দিন আগেই যমুনার জলে বানভাসি হতে হয়েছিল দিল্লিবাসী। জল পৌঁছে গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। জলের তলায় চলে গিয়েছিল রাজঘাট। বন্যার জল ছুঁয়েছিল লালকেল্লার পাঁচিলও। এখনও দিল্লির বহু নিচু এলাকা থেকে সেই জল নামেনি। এই পরিস্থিতিতেই হরিয়ানা নতুন করে জল ছাড়ায় আতঙ্ক দানা বেঁধেছে দিল্লিবাসীর মধ্যে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে হিমাচলপ্রদেশে প্রবল বর্ষণের কারণেই জল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে হরিয়ানা।
দিল্লি সরকারের তরফে অবশ্য শনিবারই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জানানো হয়েছে, বন্যাকবলিত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করা এবং পুনর্বাসন দেওয়ার কাজে সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত। ত্রাণশিবিরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত ১৩ জুলাই যমুনার জলস্তর পৌঁছেছিল ২০৮.৬৬ মিটারে। এর আগে কখনও নদীর জল এতটা বাড়েনি। ১৯৭৮ সালে যমুনার জলস্তর পৌঁছেছিল ২০৭.৪৯ মিটারে। তার পর গত ১৩ জুলাই ফের তা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। টানা আট দিন বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল যমুনার জল। তার পর ধীরে ধীরে কমেছিল জলস্তর। গত মঙ্গলবার তা বিপদসীমার নীচে নেমেছিল। কিন্তু হিমাচল-সহ উচ্চ পার্বত্য এলাকায় টানা বৃষ্টির কারণে ফের তা ওঠানামা শুরু করে। শুক্রবারের পর রবিবার সেই জলস্তর আবার বিপদসীমা ছাড়াল।
যমুনার জলস্তর এ ভাবে বাড়তে থাকলে দিল্লিতে ফের ধাক্কা খেতে পারে পানীয় জল সরবরাহ। ওয়াজিরাবাদের পাম্পিং স্টেশনে জল জমে থাকায় পানীয় জল সরবরাহে ঘাটতি হয়েছিল। গত মঙ্গলবার থেকে তা স্বাভাবিক হয়েছিল। ফের তাতে ব্যাঘাত হতে পারে। এর ফলে দিল্লির বহু নিচু জায়গায় জমে থাকতে পারে জল। সে কারণে ঘরছাড়া মানুষের ঘরে ফিরতে আরও সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। দিল্লিতে জল জমে ইতিমধ্যেই ঘরছাড়া প্রায় ২৭ হাজার মানুষ। তাঁরা এখনও রয়েছেন ত্রাণশিবিরে।
(সংবাদটি প্রকাশের সময় শিরোনামের নীচে অনবধানতাবশত ভিন্ন একটি খবর চলে গিয়েছিল। গোচরে আসা মাত্র তা সংশোধন করা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)