ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীকে অস্বস্তিতে ফেলে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ এস গুরুমূর্তির কোপের মুখে পড়লেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। যে গুরুমূর্তিকে সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ডে মনোনীত করেছে মোদী সরকার। গুরুমূর্তির যুক্তি, রাজন একেবারে ‘হাতুড়ি মেরে’ অনাদায়ি ঋণের সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন। অনাদায়ি ঋণের সঙ্গে যে সব ঋণ শোধ হওয়া মুশকিল, সেগুলি নিয়ে ব্যাঙ্কের পদক্ষেপ করার উপরে জোর দেননি তিনি। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই তা হয়। এটা রাজন মানতে চাননি বলে তাঁর দাবি।
ব্যাঙ্কের অনাদায়ি ঋণ নিয়ে সংসদের এস্টিমেট কমিটিতে পাঠানো নোটে রাজন বলেছেন, তিনি ‘হাই প্রোফাইল’ ব্যাঙ্ক জালিয়াতির একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে দিয়েছিলেন। অনাদায়ি ঋণের সমস্যা কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, তা-ও জানিয়েছেন রাজন। একই সঙ্গে মোদীর ‘মুদ্রা-ঋণ’ প্রকল্প যে নতুন করে অনাদায়ি ঋণের সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন রাজন।
আজ আরএসএস-ঘনিষ্ঠ ও স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা গুরুমূর্তির বক্তব্য, আর্থিক ও বাণিজ্যিক নীতির মাধ্যমেও অনাদায়ি ঋণ সমস্যার সমাধান করা যায়। এ ক্ষেত্রে সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মধ্যে সমন্বয় দরকার। তা হয়নি।
রাজনের মত ছিল, ২০০৬ থেকে ২০০৮-এর মধ্যে ব্যাঙ্কগুলি অতি-উৎসাহী হয়ে ঋণ বিলি শুরু করে। ২০০৮-এর মন্দার পরে সেই ঋণ আর শোধ হয়নি। গুরুমূর্তির মত, ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এ বিষয়ে আগেভাগে সতর্ক করা উচিত ছিল’ বলে রাজন তাঁর পূর্বসূরিদের দিকে দায় ঠেলেছেন। কিন্তু নিজে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে ওই সব ঋণের ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার উপরে জোর দেননি।
মুদ্রা-ঋণ নিয়েও রাজনের আশঙ্কা ভুল বলে গুরুমূর্তির দাবি। সরকারি তথ্য বলছে, মুদ্রা প্রকল্পে বিলি হওয়া ৬ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে ইতিমধ্যেই ১৪ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ি ঋণের খাতায় চলে গিয়েছে। কিন্তু গুরুমূর্তির যুক্তি, ‘‘এই ধরনের ক্ষুদ্র ঋণ শোধ না-হওয়ার হার খুবই কম। ছোট-মাঝারি শিল্পের চেয়েও কম। তা হলে মুদ্রাকে দোষ দেওয়া কেন?’’