ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের ঠিক আগে, আজ রাতেই দিল্লি চলে এলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আগামিকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সূত্রের দাবি, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ কাণ্ডে ইডির তদন্ত যাতে ‘আরও গভীরে যায়’, তা নিশ্চিত করতে শুভেন্দুর দিল্লি যাত্রা। শাহের সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
আগামী রবিবার নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদের বৈঠক। তাতে যোগ দিতে চলতি সপ্তাহে দিল্লি আসছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করার কথা তাঁর। রাজনীতির অনেকের মতে, দলে অনেকের আশঙ্কা যে পার্থ মুখ খুললে তৃণমূলের আরও কিছু শীর্ষ নেতা জড়িয়ে পড়তে পারেন। এমন আবহে মমতার দিল্লি সফর ঘিরে বাম-কংগ্রেস যখন বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে সরব, শুভেন্দুর দিল্লি সফর তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি যাতে ‘আরও গভীরে’ গিয়ে তদন্ত করে, ইডির ‘ফাঁস’ যাতে আরও কড়া হয়, সেই সওয়াল করতে কাল শাহ-সাক্ষাতের পরিকল্পনা শুভেন্দু-সুকান্তের। দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে শুভেন্দুর।
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে যুক্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি, মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে আজ সংসদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না-বিক্ষোভ করেন বিজেপি সাংসদেরা। সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও ওই ধর্না মঞ্চে ছিলেন দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্তা, হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়রা। পরে সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্তু দাবি করেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশ সরে গিয়েছে দল। তাই তাঁর উচিত, কারা ষড়যন্ত্র করেছে তাঁদের নাম বলে দেওয়া। তবে প্রতি জেলা থেকে নাম উঠে আসছে। মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে এখন ঘর সামলানো কঠিন।’’
আজ পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। গত লোকসভায় বিজেপি রাজ্যে আঠারোটি আসন জিতলেও আজ গান্ধী মূর্তির সামনে মাত্র পাঁচ সাংসদদের উপস্থিতি নিয়ে সরব হন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তুনু সেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বাকিরা কোথায়!’’ একই সঙ্গে সুকান্ত ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ নিয়ে সরব হন শান্তুনু। তাঁর দাবি, ‘‘অতীতে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য ছিলেন সুকান্ত। সে সময়ে ভাল সম্পর্ক থাকার সুবাদে নিজের স্ত্রীয়েরস্কুলে বদলি অনায়াসে করিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।’’
পাল্টা জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে আমার স্ত্রী এবং আর এক শিক্ষকের বদলি হয়েছিল। অতীতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ ধরনের অভিযোগ তুলেছিলেন। যার ভিত্তিতে পার্থকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত পার্থের সঙ্গে কথা বলিনি।’’ এ দিন লোকসভার আলোচনায় কালো টাকা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পার্থের গ্রেফতারি ও ৫০ কোটি টাকা উদ্ধারের প্রসঙ্গ তোলেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। পাল্টা প্রতিবাদ জানান তৃণমূল নেতৃত্ব।