রাঘব চড্ডা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর নিজের টুইটার (অধুনা এক্স) বায়ো বদলে ফেললেন আপ নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চড্ডা। এত দিন তাঁর পরিচয় হিসাবে টুইটারে শোভা পেত, ‘মেম্বার অফ পার্লামেন্ট’। তবে ভারতের সংসদের সদস্য, এই পরিচয়কে মুছে ফেলে নিজের টুইটার বায়োতে ‘সাসপেন্ডেড সদস্য’ লিখলেন চাড্ডা। এর আগে সাংসদ পদ হারানোর পর নিজের টুইটার বায়ো বদলে ফেলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
গত ২৪ মার্চ সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পরে এই ‘বায়ো’ বদলে ফেলেন রাহুল। ‘অযোগ্য সাংসদ’ পরিচয়ের আগে সেখানে স্থান পেয়েছিল ‘কংগ্রেস নেতা’ হিসাবে তাঁর পরিচিতির দিকটি। সোমবার সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার পর অবশ্য রাহুলের টুইটার বায়ো আবার বদলান তিনি। সেখানে লেখা হয় ‘মেম্বার অফ পার্লামেন্ট’। অর্থাৎ, সংসদের সদস্য।
গত মার্চ মাসে রাহুল যখন টুইটারের বায়ো বদলে ফেলেন, তখন সেখানে লেখা ছিল, “এটি রাহুল গান্ধীর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য।” এর পরেই নতুন শব্দবন্ধ জোড়ে অ্যাকাউন্টে। লেখা হয়, ‘ডিস্’কোয়ালিফায়েড এমপি’ (অযোগ্য সাংসদ)। আভিধানিক বানান ‘ডিস্কোয়ালিফায়েড’-এর বদলে রাহুল ডিস্’কোয়ালিফায়েড কেন লিখেছিলেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্য পাওয়া যায়নি। মনে করা হয়, নিজের সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে বিদ্রুপ করতে সচেতন ভাবেই ওই বানান লেখেন রাহুল। গত চার মাস ধরে ওই ‘বায়ো’ই জ্বলজ্বল করেছে তাঁর টুইটার হ্যান্ডলে। মনে করা হচ্ছে, সেই বিদ্রুপের কৌশল থেকে নিজের সাসপেন্ড হওয়ার বিষয়টিকে সামনে রাখতে চাইলেন রাঘব। কারণ সাসপেন্ড হলেও ‘সংসদের সদস্য’ পরিচয়ে কোনও হেরফের হওয়ার কথা নয়।
গত শুক্রবার আপ সাংসদ রাঘবকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। স্বাধিকাররক্ষা (প্রিভিলেজ) কমিটি যত দিন না এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিচ্ছে, তত দিন রাঘবকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হয়েই থাকতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘দিল্লি সার্ভিসেস বিল’ সংক্রান্ত প্রস্তাব রাজ্যসভায় পেশ করার সময় পাঁচ সাংসদের সই জাল করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
গত ৭ অগস্ট রাজ্যসভার চার জন সাংসদ অভিযোগ করেছিলেন যে, রাঘব তাঁদের সই জাল করেছেন। বুধবার ধনখড় সেই অভিযোগগুলি স্বাধিকাররক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, সোমবারেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন যে, আপ সাংসদ রাঘব দিল্লি অধ্যাদেশ বিলকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে পাঁচ সাংসদের সই জাল করেছিলেন। সস্মিত পাত্র, এস ফাঙ্গনন কোনয়াক, এম থাম্বিদুরাই এবং নরহরি আমিনের অভিযোগ ছিল, রাঘব অনুমতি না নিয়েই সই জাল করে তাঁদের নাম হাউস প্যানেলে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। যদিও আপের পাল্টা যুক্তি ছিল, বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে গেলে সাংসদদের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয় না। শুক্রবার জানা যায়, রাঘবকে স্বাধিকারভঙ্গের অভিযোগে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।