—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যের কোন কোন পাহাড়ে কত পরিমাণে আফিম চাষ হচ্ছে এবং আশপাশের বসতির সংখ্যা কত- সেই সব সমীক্ষার কাজ চলছে মণিপুরে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানান, সমীক্ষার কাজ শেষ হলেই বায়ুসেনার কপ্টারকে কাজে লাগিয়ে আফিম খেত ধ্বংস করার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, রাজ্য ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। যে সব গ্রামের ঘরবাড়ি পোড়ানো বা ভাঙা হয়নি, সেখানকার বাসিন্দারাও ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরছেন। প্রতিটি পরিবারকে সরকার ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। জেলাশাসকেরা স্কুলে যেতে না পারা বাচ্চাদের সংখ্যা সংগ্রহ করছেন। তাদের স্কুলে পাঠানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা হবে। কুকি এলাকা নিয়ে বীরেন বলেন, ‘‘চূড়াচাঁদপুর ও কাংপোকপি বাজারে স্বাভাবিক কেনাকাটা চলছে।’’
কুকি যৌথ মঞ্চ কোটু দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি রাজ্যে আসেন ও উদ্যোগী হন তবে রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ৫ মিনিট লাগবে।
এর মধ্যেই এনপিপির যুব ফ্রন্টের দফতরে ও সভাপতি লাইতোনজাম জয়ানন্দের বাড়িতে গভীর রাতে হানাদারি ও গুলিচালনার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দলের সহ-সভাপতি ওয়াই জয়কুমার বলেন, ‘‘কোনও সংগঠনের সঙ্গে এনপিপির বৈরিতা নেই। আমরা মেইতেই স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যই করছি। হয়তো মাদক-সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালিয়েছে। ঘটনার এনআইএ তদন্ত হোক। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ১৩টি বুলেট এনপিওয়াইএফ দফতরের দেওয়াল ও ছাদে লেগেছে।’’
অন্য দিকে মণিপুরের ছাত্র বিক্ষোভে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও ছাত্রদের দৈহিক ক্ষতির বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশনের নোটিসের পরে এ বার হাই কোর্টের নোটিসও পেল রাজ্য। অবসরপ্রাপ্ত দায়রা বিচারক এ নতুনেশ্বরীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজিপি, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, পশ্চিম ইম্ফলের এসপি ও ১৬ নম্বর জাঠ রেজিমেন্টের কর্নেলকে নোটিস পাঠিয়ে জবাব তলব করেছে। আবেদনে বলা হয়েছে, পেলেট গান ব্যবহার করে ছাত্রদের মুখ-মাথায় অজস্র ক্ষত তৈরি করার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনী যথেচ্ছ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে, লাঠি চালিয়েছে। শুধু বিক্ষোভ স্থলেই নয়, সেনা ও আধাসেনার পাড়ায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে ছাত্রদের পেটানোর ভিডিয়োও রয়েছে। আদালত এক সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যসচিবকে জানাতে বলেছে, জখম ছাত্রদের ক্ষতিপূরণ বাবদ কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
এ দিকে মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকেকে সাংবাদিক মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমি কিছু বলব না। কিছু বললেই মতানৈক্য সৃষ্টি হবে।’’ তিনি এও মেনে নেন, রাজ্যের যা পরিস্থিতি তাতে কোনও কুকি বিধায়ক রাজভবনে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তার উপায় নেই। তবে তিনি জানান, কুকি বিধায়কদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দিল্লিতেও তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন। দুই সম্প্রদায়ের সঙ্গেই কথা বলে শান্তি ও আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি। ঘুরছেন দুই সম্প্রদায়ের শরণার্থী শিবিরেই।