Surrogacy

গর্ভদানে সায় অনাত্মীয়কেও, প্রস্তাব সিলেক্ট কমিটির

‘সারোগেসি (রেগুলেশন) বিল ২০১৯’-এর পরিমার্জনার জন্য রাজ্যসভার ২৩ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

শুধু নিকটাত্মীয়দের মধ্যে থেকেই গর্ভদাত্রী মা হতে পারবেন, এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মত দিল সংসদীয় সিলেক্ট কমিটি। ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের একক মহিলাদেরও সারোগেসির মাধ্যমে মা হওয়ার অধিকার দেওয়ার পক্ষে মত দিল কমিটি।

Advertisement

‘সারোগেসি (রেগুলেশন) বিল ২০১৯’-এর পরিমার্জনার জন্য রাজ্যসভার ২৩ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছিল। বুধবার ওই কমিটির চেয়ারম্যান ভূপেন্দ্র যাদব তাঁদের রিপোর্ট পেশ করেন। তাঁরা এই বিলে ১৫টি পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, ‘সারোগেট মাদার’ বা গর্ভদাত্রী মায়ের ভূমিকা নিতে ইচ্ছুক যে কোনও মহিলাকে এর
সুযোগ করে দেওয়া। বিলে বলা হয়েছিল, একমাত্র সন্তানলাভে ইচ্ছুক বাবা-মায়ের কোনও নিকটাত্মীয়া ছাড়া অন্য কেউ ‘গর্ভদাত্রী মা’ হতে পারবেন না।

এর বিরোধিতা করে সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, এতে শুধু যে গর্ভদাত্রী পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে, তা-ই নয়, বিধবা বা বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলাদের পক্ষেও সারোগেসির মাধ্যমে মা হওয়া প্রায় অসম্ভব হবে। কারণ, সামাজিক চাপে তাঁদের অধিকাংশের ইচ্ছা থাকলেও নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করতে পারেন না। তাঁদের হয়ে এই ভূমিকা পালনে নিকটাত্মীয়রাও দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অন্য কোনও ইচ্ছুক মহিলার সাহায্য নেওয়ায় বাধা থাকা উচিত নয় বলেই কমিটির মত।

Advertisement

গত বছর ২১ নভেম্বর রাজ্যসভা বিলটি পরিমার্জনার জন্য ওই কমিটির কাছে পাঠায়। সারোগেসি ক্লিনিক এবং সারোগেসির পরিষেবায় জড়িত চিকিৎসকেরা এই খবরে উচ্ছ্বসিত। আগের প্রস্তাব অক্ষুণ্ণ থাকলে সারোগেসি প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ করে দিতে হবে বলে অনেকেরই মত। গুজরাতের আনন্দ যেমন সারোগেসি প্রক্রিয়ার জন্য বিশ্বখ্যাত। একে ভারতের ‘সারোগেসি রাজধানী’ও বলা হয়। আনন্দের বিখ্যাত সারোগেসি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক নয়না পটেল ফোনে বলেন, ‘‘দারুণ খবর। এখন ‘নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি’র যুগ। এই রকম গুরুদায়িত্ব পালন করবেন সেই নিকটাত্মীয় লোকে পাবে কোথায়? নিকটাত্মীয়া থাকলেও তিনি রাজি হবেন বা তাঁর বয়স ও শারীরিক অবস্থা যথার্থ হবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। সংসদীয় কমিটি এটা বুঝতে পেরেছে।’’

আরও প্রস্তাব

• গর্ভদাত্রী মায়ের বিমা সুরক্ষার সময়সীমা ১৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ৩৬ মাস

• বিল অনুযায়ী, কোনও দম্পতি বিয়ের পাঁচ বছর পরও সন্তান না হলে সারোগেসির সাহায্য নিতে পারবেন। কমিটির মতে, পাঁচ বছরের সময়সীমা কমানো দরকার

• জরায়ু নেই বা জরায়ু ঠিক ভাবে কাজ না করলে বা ক্যানসার বা ফাইব্রয়েড বা টিউমারের জন্য জরায়ু বাদ পড়লে সারোগেসির সুযোগদান

• সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্মের পর অভিভাবকত্ব ও অধিকার সংবলিত নথিপত্র এক জন ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে করানো

• কেন্দ্র ও সব রাজ্যকে সারোগেসি ক্লিনিক, চিকিৎসক, কেসের সংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য ‘ন্যাশনাল বোর্ড অন সারোগেসি’র কাছে জমা দেওয়া

তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমার এখানে বহু মহিলা রয়েছেন যাঁরা অর্থের বিনিময়ে গর্ভদাত্রী মায়ের ভূমিকা পালন করেন। এতে তাঁদের যেমন আর্থিক সুবিধা হয় তেমন বহু লোক সন্তান পেয়ে নিজেদের পরিবার সম্পূর্ণ করেন। সেই মহিলারা রুজি হারানোর ভয়ে ছিলেন। তাঁরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হবেন।’’

নয়না জানান, এক বার গর্ভধারণের জন্য এই মহিলারা গড়ে পৌনে পাঁচ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পান। এই মুহূর্তে তাঁর কাছে ৫৫ জন মহিলা রয়েছেন, যাঁরা অন্যের জন্য সন্তানধারণ করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement