অজিত পওয়ারকে দেখে এ ভাবেই স্বাগত জানালেন সুপ্রিয়া সুলে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
অজিত পওয়ার শিবির বদল করার পর জল্পনা ছিল দলে ভাঙনের। এমনকি তার প্রভাবে পারিবারিক সম্পর্কেও চিড় ধরতে পারে বলে মনে হয়েছিল অনেকের। তবে বুধবার বিধানসভায় শপথ গ্রহণের আগে যে ভাবে দাদা অজিত পওয়ারকে স্বাগত জানালেন শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে, তাতে দল বা পরিবারে ভাঙন তো দূরের কথা, বন্ধন আরও দৃঢ় হওয়ার ছবিই ধরা পড়ল।
শরদ পওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া নিজেও জানিয়েছেন, অজিতের সঙ্গে সম্পর্ক একই রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘দাদা (অজিত পওয়ার)-র সঙ্গে সম্পর্কে কখনও চিড় ধরেনি। দলে সকলেরই একটা ভূমিকা রয়েছে... তা পালন করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা তাঁদের দায়িত্ব।’’
সুপ্রিয়ার মতো অজিতও এ দিন দলের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমি কেবলমাত্র এনসিপির সঙ্গে রয়েছি।’’ তিন দলের জোট সরকার গড়ার সময় যখন আলোচনা চালাচ্ছে, সে সময়ই জোটকে চমকে দিয়ে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন অজিত পওয়ার। সেই সিদ্ধান্তকে অজিতের ‘ব্যক্তিগত’ আখ্যা দিলেও তাঁকে নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে বাদ পড়ার পর এনসিপি থেকেও অজিতকে বহিষ্কারের জল্পনা শুরু হয়। তবে এনসিপি প্রধান তথা অজিতের কাকা শরদ পওয়ার তাঁকে নিয়ে সব সময়ই ধৈর্য দেখিয়েছেন। তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে অজিতকে দলে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহে ইতি টেনে নিজের শিবিরেই ফিরে এসেছেন অজিত। ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লাইভ: দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই হবে, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শপথের পর বললেন অজিত পওয়ার
আরও পড়ুন: বড় বাড়াবাড়ি হচ্ছে: ধনখড় || কেন পাঠিয়েছে জানি: মমতা
গোটা পর্বে অসীম পরিণতমনস্কতার পরিচয় দিয়েছেন সুপ্রিয়া। তুতো দাদা শিবির বদল করলেও তা নিয়ে প্রকাশ্যে বিষোদ্গার করেননি। বরং বলেছেন, ‘‘ক্ষমতা আসে-যায়, সম্পর্ক থেকে যায়।’’ সেই পরিণতমনস্কতাই দেখা গেল এ দিন মহারাষ্ট্রের বিধানভবনে। অজিতকে দেখামাত্রই হাসিমুখে স্বাগত জানালেন। হাত বাড়িয়ে সুপ্রিয়াকে জড়িয়েও ধরলেন অজিত। চলে যাওয়ার সময় সুপ্রিয়া তাঁর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিলেন।
এনসিপিতে বা পরিবারের ভাঙনের জল্পনা তখন উধাও! শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এসে অজিত বলেছেন, ‘‘দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা-ই মেনে নেবেন।’’ অজিতের এই ‘ফিরে আসা’য় যেন আরও মজবুত হল বন্ধন। দলের পাশাপাশি পরিবারেরও!