কী বলছে বৈবাহিক ‘ধর্ষণ’ আইন? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ কি না, এই সম্পর্কিত মামলা শুনতে রাজি হল দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার ডিভিশন বেঞ্চ কর্নাটক হাই কোর্টের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে এই মামলার শুনানি করবে। অন্য দিকে, বুধবারই এই সম্পর্কিত অন্য একটি মামলায় রায়দান করবে দিল্লি হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার কর্নাটক হাই কোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এ নিয়ে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হবে। গত ২৩ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্ট রায় দেয়, স্ত্রীর উপর যৌন নির্যাতনকে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে মামলাকারী স্বামীর আইনজীবী সিদ্ধার্থ দাভে কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন করেন। অন্য দিকে, নির্যাতিতা স্ত্রীর তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি জানান, এই বিচার-প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই পাঁচ বছর পার করেছে। এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রমণার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। তবে এ নিয়ে কেন্দ্রকে নোটিস দেওয়া হচ্ছে। আগামী জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এ নিয়ে শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, কর্নাটক হাই কোর্টে দায়ের করা মামলায় নির্যাতিতা স্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে, স্বামী তাঁকে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করতেন। জোর করে নীল ছবি দেখাতেন। এমনকি গর্ভাবস্থাতেও তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন স্বামী।
এই মামলায় স্বামীর তরফের আইনজীবী তুলে এনেছেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার ২ অনুচ্ছেদের কথা। যেখানে বলা হয়েছে, স্ত্রীয়ের সঙ্গে যৌনতাকে কখনও ধর্ষণ বলা যায় না। যদি না সেই স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের কম হয়।
অন্য দিকে, দিল্লি হাই কোর্টে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে একটি মামলা শুনছে। সেখানে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা জানান, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলা যায় কি না, তা নিয়ে রাজ্যগুলিরও প্রতিক্রিয়া নিচ্ছে কেন্দ্র। সেই মামলার শুনানি রয়েছে বুধবার।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এই সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্র এক হলফনামায় জানায়, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে আইনে অন্তর্ভুক্ত করলে ‘বিয়ে’ নামক প্রতিষ্ঠানটিই সমস্যার মুখোমুখি হবে। তা ছাড়া, এই আইন বলে স্বামীদের ফাঁসানোরও আশঙ্কা থেকে যায়।