প্রতীকী ছবি।
‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’। শিশুকন্যাদের কল্যাণে এমনটাই স্লোগান নরেন্দ্র মোদী সরকারের। সেই জমানাতেই চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গোটা দেশে ২৪ হাজারের বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শীর্ষে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ। সেখানে ছয় মাসে ৩,৪৫৭টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
শিশু ধর্ষণে প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে পঞ্চম স্থানে। ছয় মাসে সেখানে ১৫৫১টি শিশু ধর্ষণের অভিযোগে এফআইআর জমা পড়েছে।
শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট একের পর এক এ জাতীয় ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আদালতের রেজিস্ট্রিকে এ নিয়ে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলির জন্য এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করতে পারে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশেই আদালতের রেজিস্ট্রি গোটা দেশে শিশু ধর্ষণের তথ্য জোগাড় করে হিসেব কষেছে। তাতেই ছয় মাসে ২৪ হাজারের বেশি ধর্ষণের পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের চরম উদাসীনতার জেরেই সুপ্রিম কোর্টকে এ ভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ২৪,২১২টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মাত্র ৯১১টি মামলায় বিচার শেষ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে সবথেকে বেশি ঘটনা ঘটলেও মাত্র ৩ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এই কারণেই কি সরকার ২০১৬ থেকে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো-র পরিসংখ্যান ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে?’’
শিশু ধর্ষণে প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পরেই অবশ্য রয়েছে কংগ্রেসশাসিত মধ্যপ্রদেশ আর রাজস্থান। তার পর চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর যুক্তি, ‘‘গোবলয়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ফারাক হল, ওই সব রাজ্যে অনেক ঘটনা থানা-পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছয় না। নিচু জাতের কোনও পরিবারে এ ঘটনা ঘটলে পুলিশ এফআইআর নেয় না। এ রাজ্যের ছবি তা নয়। এখানে এফআইআর নেওয়া হয়। তাই সংখ্যাটা বেশি।’’ একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে মামলার নিষ্পত্তিও দ্রুত হচ্ছে বলে অনন্যার দাবি। হিসেব বলছে, রাজ্যে ১,৫৫১টি এফআইআর-এর মধ্যে ৯৯টি-র বিচার শেষ হয়েছে। যার হার ৬ শতাংশ।