ছবি: সংগৃহীত।
সুপ্রিম কোর্টে পেগাগাস কাণ্ডে তদন্তের আর্জির মামলার শুনানি কাল। ঠিক তার আগের দিন আজ পেগাসাস-কাণ্ডে নতুন রিপোর্ট জানাল, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণ মিশ্রের ব্যবহার করা একটি নম্বরও সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় যোগ করা হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিশ্র এখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। কর্মরত অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। মোদী সরকারের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির এক সহকারীর ফোন নম্বরও সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় যোগ করা হয়েছিল। ওই ফোন নম্বরটি রোহতগিরই যোগাযোগের নম্বর হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া ছিল। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির দুই কর্মীর নম্বরও একই তালিকায় ছিল।
পেগাসাস কাণ্ডে তদন্ত চেয়ে প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমার, রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ জন ব্রিটাস এবং আইনজীবী এম এল শর্মা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে। পেগাসাস স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে দিয়ে সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় থাকা পাঁচ সাংবাদিকও বেআইনি আড়ি পাতায় যুক্ত সরকারি আধিকারিকদের শাস্তি ও পেগাসাস ব্যবহারকে বেআইনি ঘোষণা করার দাবি নিয়ে আদালতে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, কলকাতার এসএনএম আবদি-ও রয়েছেন। এর পরে এডিটর্স গিল্ডও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। এই নজরদারিকে ‘বাক্স্বাধীনতায় আঘাত ও ব্যক্তি পরিসরের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী’ বলে সওয়াল করেছেন তাঁরা। এরই মধ্যে আজ নতুন তদন্ত রিপোর্ট জানিয়েছে, আইন-আদালতের জগতের ব্যক্তিরাও সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় ছিলেন।
ইজ়রায়েলের এনএসও সংস্থা বহু দেশকে ফোন হ্যাক করার পেগাসাস স্পাওয়্যার বেচেছিল। সেই তথ্যভাণ্ডার থেকেই সম্প্রতি ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তালিকায় ফাঁস হয়ে গিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ বিশ্বের একাধিক দেশের সংবাদমাধ্যম তার তদন্তে নেমেছে। সেই তদন্তেই এ বার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণ মিশ্রর নাম উঠে এসেছে। তিনি ২০২০-র সেপ্টেম্বরে অবসর নেন। ২০১৯-এ নজরদারির তালিকায় তাঁর একটি নম্বর যোগ করা হয়। বিচারপতি মিশ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি ২০১৪-য় এপ্রিলেই ওই ফোন নম্বর ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ককে প্রতারণায় অভিযুক্ত নীরব মোদীর আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল, অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেনায় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ‘মিডলম্যান’ ক্রিশ্চিয়ান মিশেলের আইনজীবী আলজো জোসেফের নম্বরও সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় ছিল।