—ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল এস জি ভোম্ববাটকেরে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন তিনি। আদালতে তাঁর বক্তব্য, এই ধারা অস্বচ্ছ এবং বাকস্বাধীনতাকে বিপন্ন করবে। আগামিকাল শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি।
আবেদনকারীর আইনজীবী পি বি সুরেশকে আজ সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তাঁদের আবেদনের কপি যেন অ্যাটর্নি জেনারেলকে দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনে আবেদনকারীর যুক্তি, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ এই তিন অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ১৯৬২ সালের কেদারনাথ সিংহ বনাম বিহার রাজ্যের মামলায় আংশিক পঠনের পরে ১২৪(এ) ধারাকে বহাল রাখা হয়েছিল। ওই মামলায় যে যুক্তি দেখিয়ে ওই ধারাকে বহাল রাখা হয়েছিল, পরবর্তী সময় তা বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চ খারিজ করে দিয়েছিল।
ওই প্রাক্তন সেনা অফিসার তাঁর আবেদনে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তিত আইনি এবং সাংবিধানিক প্রেক্ষাপটে ১২৪(এ) ধারাটি সম্পূর্ণ ভাবে নিঃশর্তে খারিজ হওয়া উচিত। শীর্ষ আদালতে তাঁর যুক্তি, সংবিধানের পার্ট-৩-এ স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে নাগরিকদের কতগুলি মৌলিক অধিকার রয়েছে। তাঁরা তা পাওয়ার অধিকারী। রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিলের পক্ষে আবেদনকারীর যুক্তি, সরকারের প্রতি অশ্রদ্ধা বা অনাস্থার একটা অস্পষ্ট ও অস্বচ্ছ সংজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। তার মাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে অপরাধের চোখে দেখা হচ্ছে। ১৯(১)(এ) অনুচ্ছেদে স্বাধীন মতপ্রকাশের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তার উপর চাপানো হচ্ছে অযৌক্তিক বিধিনিষেধ। ফলে অবাধ বাকস্বাধীনতার উপরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। যা সংবিধানের দৃষ্টিকোণ থেকে অনুমোদন করা যায় না।
আবেদনকারী বলেছেন, ‘‘আমাদের মনে রাখতে হবে, সময় এগিয়ে চলেছে এবং তার সঙ্গে আইনেরও অগ্রগতি ঘটছে। ১৪, ১৯ এবং ২১ অনুচ্ছেদ— মৌলিক অধিকারের এই সোনালি ত্রিভূজে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য পরিবর্তন এসেছে। ফলে সময় এসেছে গোটা বিষয়টিকে নতুন করে দেখার।’’ এই প্রেক্ষাপটে আবেদন করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট যেন ১২৪(এ) ধারাটিকে নতুন করে খতিয়ে দেখে।