ফাইল চিত্র।
অধিগ্রহণের পরে জমি মালিককে জমি অধিগ্রহণ আইন মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট জমি রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে যায়। তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সামনে আর কোনও বাধা থাকে না। এ কথাই বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দার জমি ১৯৯৬ সালে অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। তার পরেও ওই ব্যক্তি অধিগৃহীত জমির একাংশে নিজের দখল কায়েম করেছিলেন। মামলা গড়ায় ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। মামলাকারীর আর্জি খারিজ করে আদালত জানিয়ে দেয়, জমির ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পরে তাতে পুরনো মালিকের কোনও অধিকার থাকতে পারে না। তার পরে গত ২ ফেব্রুয়ারি এক নোটিস জারি করে তাঁকে ওই জমি খালি করতে বলে গ্রেটার নয়ডা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। শীর্ষ আদালতের অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ের সঙ্গে একমত হয়েছেন। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চের মতে, অধিগ্রহণ পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট জমির পুরনো মালিক যদি অধিগৃহীত জমি বা জমির কোনও অংশ দখল করে রাখেন, তা হলে তা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং ওই ব্যক্তি ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে এবং তাঁকে জমি অধিগ্রহণ আইন, ১৯৮৪ মোতাবেক ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘অধিগ্রহণের পরে ওই জমিতে বসবাস করা বা তা দখল করে রাখার কোনও অধিকার আবেদনকারীর নেই। কারণ, ওই জমি রাজ্য সরকারের। হাই কোর্ট সঠিক ভাবেই এ ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি এবং এ নিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আমরা একমত।’’ এই মন্তব্যের পরেই উত্তরপ্রদেশের ওই বাসিন্দার আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত।
ইলাহাবাদ হাই কোর্টে যখন মামলাটি উঠেছিল, তখন আদালত বলেই দিয়েছিল, ক্ষতিপূরণ দিয়ে অধিগ্রহণের পরে জমির উপর পুরনো মালিকের আর কোনও অধিকার থাকবে না। সংশ্লিষ্ট জমির অধিকার রাজ্যের হাতে। একই সঙ্গে হাই কোর্ট বলেছিল, ‘‘অধিগৃহীত জমি পাহারার জন্য পুলিশ বা নিরাপত্তা রক্ষী বসানো সরকারের পক্ষে সম্ভব হয় না। সম্ভব হয় না অধিগ্রহণের পরেই সেখানে কর্মকাণ্ড শুরু করা। সেই জমি যদি কেউ দখল করেন বা সেখানে বসবাস শুরু করেন, তা হলে তাঁকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হবে।’’ হাই কোর্টের এই বক্তব্যের সঙ্গেও সহমত হয়েছে শীর্ষ আদালত।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।