—ফাইল চিত্র
পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল না। তবে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, স্নাতক স্তরে ডাক্তারির অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে বেশ কিছু ফাঁকফোকর ছিল। এই পর্যবেক্ষণের সূত্র ধরেই পরীক্ষাটির আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-কে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, তারা বার বার অবস্থান বদল না করে যেন পড়ুয়াদের স্বার্থে পরীক্ষার ফাঁকফোকরগুলি বন্ধ করার চেষ্টা করে।
নিট ইউজিতে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে একাধিক মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সব মামলাগুলিকে একত্রিত করে একাধিক শুনানির পর শুক্রবার রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, বিহারের পটনা এবং ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ ব্যতীত কোথাও পরীক্ষা ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই যুক্তিতেই মামলাকারীদের একাংশ পুরো পরীক্ষা বাতিলের যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তা খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত।
তবে পরীক্ষা বাতিল না করলেও গোটা ব্যবস্থাটিকে স্বচ্ছ রাখতে শুক্রবার একাধিক নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, যে কোনও ধরনের অনিয়মকে শনাক্ত করতে এনটিএ-কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে সরকার নিযুক্ত কমিটি। এর পাশাপাশি, প্রশ্নপত্র ছাপানো থেকে শুরু করে সেগুলি নিরাপদ জায়গায় রাখা— গোটা প্রক্রিয়াকে নিশ্ছিদ্র রাখতে ওই কমিটি এবং এনটিএ একটি নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করবে।
সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার এনটিএ-র অবস্থান বদলের বিষয়টি উত্থাপন করে। প্রসঙ্গত, কম সময় পাওয়ায় এনটিএ প্রথমে ১,৫৬৩ জন নিট পরীক্ষার্থীকে গ্রেস মার্কস বা অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে সেই সিদ্ধান্ত বদল করে তারা এবং অতিরিক্ত নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের জন্য পুনরায় পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “আমরা এনটিএ-কে বলছি, এই মামলায় তারা যে অবস্থান বদল করেছে, তা এখনই বন্ধ করুক।” এই অবস্থান বদলের কারণে পড়ুয়াদের কোনও উপকার হচ্ছে না বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।
বৃহস্পতিবারই নিট ইউজি-র প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, চার্জশিটে মোট ১৩ জনের নাম রয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে মোট ছ’টি ধারায়। সিবিআই আগেই জানিয়েছিল, নিট-ইউজির পরীক্ষার দিন, অর্থাৎ ৫ মে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের ওয়েসিস স্কুল থেকে। ঘটনাচক্রে, হাজারিবাগের নিট পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি এই স্কুল। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার পর থেকেই এই স্কুলের নাম উঠে এসেছিল। স্কুলে অধ্যক্ষ, সহ-অধ্যক্ষ এবং এক কর্মীকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, নিটের বেশ কিছু আধপোড়া প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেছিল তারা। সেই প্রশ্নপত্র খতিয়ে দেখার পর ঠিক কোন কেন্দ্র থেকে ফাঁস হয়েছিল, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।