এসসি-এসটি অ্যাক্ট ফিরিয়ে আনার নির্দেশ সুপ্রি কোর্টের।
নিজের রায়ই ফিরিয়ে নিল সুপ্রিম কোর্ট। তফশিলি জাতি উপজাতিদের বিরুদ্ধে হিংসা সংক্রান্ত বছর দেড়েক আগের রায় প্রত্যাহার করল শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৮ সালের ওই রায়ে তফশিলি জাতি-উপজাতিদের বিরুদ্ধে হিংসায় গ্রেফতারি তুলে দেয় দুই সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ। মঙ্গলবার সেই রায় খারিজ করে ওই আইন পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এখনও তফশিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ ‘নির্যাতন’ ও ‘বৈষম্যের’ শিকার হচ্ছেন।
ভারতীয় সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী তফশিলি জাতি বা উপজাতি সম্প্রদায়ের কেউ নির্যাতন, অত্যাচার বা বঞ্চনার শিকার হলে তা নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারতেন এবং ওই আইন অনুযায়ী পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতার বা উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু এই ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে একটি মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২০ মার্চ সেই ধারা তুলে দেয়। তখন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের যুক্তি ছিল, সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
কিন্তু এই রায়ের পর দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। সারা দেশের বিভিন্ন তফশিলি জাতি-উপজাতিদের সংগঠন তীব্র আন্দোলন শুরু করে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় কেন্দ্র। সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বি আর গাভাই-এর বেঞ্চে। শুনানির পর মঙ্গলবার অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ পুরনো আইনই ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, এখনও সমাজে জাত-পাতের বিভেদ রয়েছে। তফশিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন এখনও অস্পৃশ্যতা, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার। আগের রায়ের প্রেক্ষিতে অরুণ মিশ্রের বেঞ্চের বক্তব্য, কোনও আইনের অপপ্রয়োগ হলে সেটা আইনের সমস্যা নয়, তার প্রয়োগের সমস্যা, যার জন্য দায়ী কোনও ব্যক্তির ব্যর্থতা। এই রায় সংবিধানের ভাবাবেগের বিরুদ্ধে বলেও মন্তব্য এই বেঞ্চের।
আরও পডু়ন: রাজীব কুমারের আগাম জামিন মঞ্জুর করল হাইকোর্ট, ধাক্কা খেল সিবিআই
আরও পড়ুন: ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে পাকিস্তানের জন্য উন্নত যুদ্ধজাহাজ বানাচ্ছে তুরস্ক
সরকারের পক্ষে কে কে বেণুগোপাল বলেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও তফশিলি জাতি-উপজাতিদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ সরকার। এখনও বিভেদ অস্পৃশ্যতার মতো রোগের শিকার এই শ্রেণির মানুষজন। ২০১৮ সালের রায়ে বলা হয়েছিল, এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে আগে তদন্ত করে অভিযোগের সারবত্তা থাকলে তারপর প্রয়োজনে গ্রেফতার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নতুন রায়ে অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, আইনে সব সময়ই আগাম জামিনের সংস্থান রয়েছে। কেউ অভিযোগ দায়ের করার পর অভিযুক্ত ইচ্ছা করলেই আগাম জামিনের আর্জি জানাতে পারবেন এবং অভিযোগের সারবত্তা না থাকলে আগাম জামিন পেয়েও যাবেন তিনি।