বিলকিস বানো। —ফাইল চিত্র।
গত এপ্রিল মাসে রায় শুনিয়েছিল আদালত। তার পর পাঁচ মাস কেটে গেলেও, আজও ক্ষতিপূরণ পাননি গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া বিলকিস বানো। তার জেরে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত হল গুজরাত সরকার। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে বিলকিস বানোর হাতে ক্ষতিপূরণের ৫০ লক্ষ টাকা, চাকরি এবং বাসস্থান তুলে দিতে হবে বলে তাদের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।
ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস বানো। এ দিন আদালতে তাঁর সেই আবেদনের শুনানি চলাকালীনই গুজরাত সরকারকে তিরস্কার করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ক্ষতিপূরণ দিতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চান। জবাবে তার গুজরাত সরকারের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, রাজ্য চায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হোক। সেই মর্মে আবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কিন্তু তাঁর আর্জি খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানায়, ‘‘পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেই ক্ষতিপূরণ বাবদ নগদ টাকা, চাকরি এবং মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের বন্দোবস্ত করে দিতে বলা হয়েছিল। তাই নতুন করে তা পর্যালোচনা করে দেখার প্রশ্ন ওঠে না। আগামী দু’সপ্তাহ সময় দিলাম আপনাদের। তার মধ্যে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে হবে। যদিও এতটা সময়ও প্রয়োজন ছিল না আপনাদের।’’
আরও পড়ুন: ইমরানের হুমকির জবাব অমিতের
২০০২ সালের ৩ মার্চ গুজরাতে গণধর্ষণের শিকার হন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস। তাঁর চোখের সামনেই খুন করা হয় পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে, যার মধ্যে সামিল ছিল তাঁর সাড়ে তিন বছরের মেয়ে সালেহাও। ধর্ষণ করে খুন করা হয় ওই পরিবারের আরও কয়েক জন মহিলা সদস্যকে। সেই থেকে টানা ১৭ বছর আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন বিলকিস বানো।
আরও পড়ুন: নেহরুর ‘ভুল’ শুধরে কাশ্মীরের ‘সত্যি’ ইতিহাস লিখতে চান অমিত
শেষমেশ এ বছর এপ্রিল মাসে বিলকিস বানোকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা, সরকারি চাকরি এবং বাসস্থান দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু এত দিনেও তা করে উঠতে পারেনি গুজরাত সরকার। বিলকিস বানো কাণ্ডে গুজরাত পুলিশের বিরুদ্ধে আগেই তদন্ত বিপথে চালিত করার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে জড়িত অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধেও অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।