পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে খাবার ও পরিবহণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।
লকডাউনের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলো যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ও ‘যথেষ্ট নয়’। সেই খামতি দূর করে শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে পরিবহণ, খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
বিচারপতি অশোক ভূষণ, সঞ্জয় কিষাণ ও এমআর শাহের নেতৃত্বাধীন ওই বেঞ্চ জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানে সরকারগুলির আরও উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। আগামিকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে হবে সেই মামলার শুনানি। কেন্দ্র ও দেশের বিভিন্ন রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে ওই মামলায়।
মঙ্গলবার এই বেঞ্চের তরফে কেন্দ্র ও সব ক’টি রাজ্য সরকারকে নোটিস জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে আদালতে উপস্থিত থেকে মামলার শুনানিতে সহায়তা করারও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷
কেন তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করলেন, সেই ব্যাখ্যাও এ দিন দেওয়া হয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চের তরফে। তাঁরা বলেছেন, ‘‘সংবাদপত্রের প্রতিবেদন ও মিডিয়া রিপোর্ট চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পরিযায়ীদের শোচনীয় অবস্থা। লকডাউনের শুরুতে তাঁরা যেখানে আটকে ছিলেন সেখানে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় জল না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। সে জন্যই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে বাড়ি ফিরতে চাইছেন তাঁরা। হাজার হাজার কিলোমিটার হেঁটে বা সাইকেলে করে বাড়ি ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়াল, মৃত ৪৩৩৭
শীর্ষ আদালতের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকরা সমাজের একটি বড় অংশ। তাঁরা সমস্যায় রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির উচিত তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। যত দ্রুত সম্ভব পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে খাবার, আশ্রম ও পরিবহণের ব্যবস্থা করতে হবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র— এই মর্মে মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। অবশ্য সে সময় মামলাটি খারিজ করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। তখন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাস্তায় কে হাঁটছে, তা পর্যবেক্ষণ করা আদালতের পক্ষে অসম্ভব।
আরও পড়ুন: চড়া সুর চিনের, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রস্তুত ভারতও