কেশবানন্দ ভারতী মামলার সওয়াল, লিখিত বক্তব্য ও রায় একটি ওয়েব পেজে প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায়কে নিশানা করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। আজ সেই রায়ের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ওই মামলার সওয়াল, লিখিত বক্তব্য ও রায় একটি ওয়েব পেজে প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ের বার্ষিকীকে স্মরণ করে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে খোঁচা দিল কংগ্রেসও।
আজ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সদস্যেরা বলেন, ‘‘১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ সেই রায়দানের ৫০তম বার্ষিকী। দেশ-বিদেশের গবেষকদের জন্য সেই রায়, সওয়াল ও লিখিত বক্তব্য একটি ওয়েব পেজে প্রকাশ করেছি আমরা।’’ কোর্টে উপস্থিত আইনজীবীরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সংবিধানের কিছু অংশ তার মূল কাঠামো। যার মধ্যে রয়েছে ভারতবাসীর মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত অনুচ্ছেদও। সেই কাঠামো পরিবর্তনের অধিকার সংসদ, আরও স্পষ্ট করে বললে সংসদে ক্ষমতাসীন সরকারের নেই।
সম্প্রতি এই রায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়। সংবিধানের কোনও অংশকে সংসদের সংশোধনের আওতার বাইরে রাখার রায়কে ‘খারাপ নজির’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তাঁর মতে, এই প্রক্রিয়ায় সরকারের আরও বেশি ভূমিকা থাকা উচিত। বিরোধীদের দাবি, সরকার সংবিধান সংশোধন করে মূল কাঠামো বদলাতে চায়। আর সেই সংশোধনকে চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্র সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করতে চায়। আইনজীবীদের একাংশের মতে, কেশবানন্দ ভারতী মামলার সব তথ্য প্রকাশ করে সরকারকে বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। কোনও বিশেষ রায় নিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে এমন পদক্ষেপের নজির কম বলে মত তাঁদের।
আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায়ের বার্ষিকী স্মরণ করে বলেন, ‘‘এখন রোজই মোদী সরকার সংবিধানের মূল কাঠামোর উপরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’’
কিন্তু আইনজীবীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায় যাতে সরকারের পক্ষে যায় সে জন্য যথেষ্ট ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।