শীর্ষ আদালতের সব বিচারপতির সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত। — প্রতীকী চিত্র।
প্রকাশ্যে আসবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সম্পত্তির হিসাব। শীর্ষ আদালতের সব বিচারপতি নিজেদের সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ্যে আনতে সম্মত হয়েছেন। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ অনুসারে, স্বচ্ছতা এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাকে আরও জোরদার করতেই এই সিদ্ধান্তে সহমত হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।
গত ১ এপ্রিল শীর্ষ আদালতে ‘ফুল-কোর্ট’ (সব বিচারপতির উপস্থিতিতে) বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতির সম্পত্তির হিসাব আগেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল। ‘লাইভ ল’ সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে নিজেদের সম্পত্তির হিসাব সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা যাবে, এই মর্মে একটি ঘোষণাপত্রও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতিরা।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনে ‘নগদকাণ্ড’ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। বিতর্কের আবহে তাঁকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলির সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। তা নিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের আইনজীবীদের মধ্যে অসন্তোষও দেখা গিয়েছিল। ‘নগদকাণ্ড’ ঘিরে বিতর্কের আবহেই এ বার বিচারব্যবস্থার প্রতি জনতার ভরসা বজায় রাখতে পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘লাইভ ল’ অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতি ইতিমধ্যে নিজেদের সম্পত্তির হিসাব জমা দিয়েছেন। তবে সেটি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ওই সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ্যে আনার নির্দিষ্ট পদ্ধতি যথাসময়ে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে ১৯৯৭ সালে একটি ‘ফুল-কোর্ট’ বৈঠক হয়েছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের সম্পত্তির বিষয়ে। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস বর্মার নেতৃত্বে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, প্রত্যেক বিচারপতি তাঁদের সম্পত্তির হিসাব শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দেবেন। তবে সেটি প্রকাশ্যে আনা বাধ্যতামূলক ছিল না। পরে ২০০৯ সালে আরও একটি ‘ফুল-কোর্ট’ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কোনও বিচারপতি স্বেচ্ছায় সম্পত্তির হিসাব শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে প্রকাশ্য আনতে চাইলে, তা তিনি করতে পারেন। তবে ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ সাল থেকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কারণ উল্লেখ করে কোনও বিচারপতির সম্পত্তির তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যদিও পরে ২০১৯ সালে একটি রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বিচারপতিদের সম্পত্তির হিসাব তাঁদের ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ নয়।
বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে ৩৩ জন বিচারপতি রয়েছেন। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, পরবর্তী সময়ে যাঁরা শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হবেন, তাঁদেরও সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ্যে আনা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে।