(বাঁ দিক থেকে) প্রচণ্ড, কেপি শর্মা ওলি এবং শের বাহাদুর দেউবা। — ফাইল চিত্র।
দেড় বছরের মাথাতেই আবার ক্ষমতার পালাবদলের মুখে নেপাল। প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল ওরফে প্রচণ্ডের সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পর বুধবার নয়া জোটের ঘোষণা করেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউএমএল)। আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা নেপালি কংগ্রেসের প্রধান শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে জোট সরকার গড়ার বিষয়ে ইতিমধ্যেই সমঝোতা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ওলির দল।
নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের আসন সংখ্যা ২৭৫। এর মধ্যে দেউবার নেপালির কংগ্রেসের ৮৮ এবং ওলির সিপিএন (ইউএমএল)-এর ৭৯ জন সদস্য রয়েছেন। অর্থাৎ দু’দল হাত মেলালে অনায়াসেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ১৩৮ ছোঁয়া সম্ভব। অন্য দিকে, প্রচণ্ডের দল সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর ৩২ সদস্য রয়েছেন। মাওবাদীদের দুই সহযোগী দল, রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্রতা পার্টির ২১ এবং সিপিএম (ইউনিফায়েড সোশ্যালিস্ট)-এর ১০ জন হাউস সদস্য।
২০২২ সালের নভেম্বরে নেপালের সাধারণ নির্বাচনে নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল প্রচণ্ডের মাওয়িস্ট সেন্টার। কিন্তু জোটে জেতার পরেই দেউবাকে ছেড়ে ওলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন প্রচণ্ড। ২০২৩-এর মধ্যপর্বে ওলির সঙ্গে মতবিরোধের সময় দেউবার সমর্থন নিয়ে কাঠমান্ডুর কুর্সি বাঁচিয়েছিলেন একদা গেরিলা যোদ্ধা। কিন্তু এ বার ‘চিনপন্থী’ ওলি ‘জাতীয়তাবাদী’ দেউবার সঙ্গে হাত মেলানোয় আইনসভার পাটিগণিতের হিসাবে প্রচণ্ড ব্যাকফুটে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রচণ্ডের নেতৃত্বেই নব্বইয়ের দশকে নেপালে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেছিল মাওবাদীরা। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির পর দেড় দশক আগে নেপাল থেকে রাজতন্ত্রের অবসান হয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার ভারতের উত্তর প্রান্তের এই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ২০০৮ থেকে সেখানে ১৩ বার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে। শুক্রবার হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে প্রচণ্ড সরকারের শক্তিপরীক্ষা। তার আগে বৃহস্পতিতে ১৪তম প্রধানমন্ত্রীর নাম স্থির করতে বৈঠক করেছেন দেউবা এবং ওলি।