সুপ্রিম কোর্টে দোষী সাব্যস্ত প্রশান্ত ভূষণ। —ফাইল চিত্র
বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে টুইট নিয়ে নিজের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে আদালত অবমাননার রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি পেশ না হওয়া পর্যন্ত শাস্তিদান প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি মানতে রাজি হয়নি বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। ভূষণকে শাস্তিদানের ভার অন্য বেঞ্চের হাতে তুলে দেওয়ার আর্জিও মানেনি শীর্ষ আদালত। বেঞ্চ জানিয়েছে, ভূষণ চাইলে ২৪ অগস্টের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে পারেন। যদি ক্ষমা চান তবে তা বিবেচনা করার জন্য ২৫ অগস্ট শুনানি হবে।
আদালত অবমাননার মামলায় দোষী সাব্যস্ত ভূষণের তরফে আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে ও রাজীব ধবন আজ সওয়ালে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘‘আমি ক্ষমা চাইছি না। ঔদার্য ভিক্ষাও করছি না। আমি যা করেছি তাকে নাগরিকের সর্বোচ্চ কর্তব্য বলে মনে করি। কিন্তু আদালতের বিচারে তা অপরাধ। এ জন্য যে শাস্তি দেওয়া হবে তা আমি হাসি মুখে মানতে রাজি।’’ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালও ভূষণকে শাস্তি না দেওয়ার আর্জি জানান। বিচারপতি মিশ্র বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রেই লক্ষ্মণরেখা আছে। সেটা পেরোনোর প্রয়োজন কি? আমরা জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় মামলার বিচার করতেই চাই। ২৪ বছর ধরে বিচারপতি হিসেবে কাজ করলেও আমি কাউকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করিনি। এই প্রথম এমন নির্দেশ দিয়েছি।’’
ভূষণকে শাস্তি দেওয়ার ভার অন্য বেঞ্চের হাতে দেওয়ার আর্জি খারিজ করে বিচারপতি মিশ্রের বেঞ্চের সদস্যেরা জানান, এটা ঠিক নয়। কোনও সময়েই শাস্তিদানের ভার অন্য বেঞ্চকে দেওয়া হয় না। রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি পেশের জন্য অপেক্ষা করতেও রাজি হননি তাঁরা। বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি ভূষণকে শাস্তি দেওয়া হয় তবে পুনর্বিবেচনার আর্জির ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত সেই শাস্তি কার্যকর করা হবে না।
আরও পড়ুন: ‘১৭০ কোটি লাভ, তিরুঅনন্তপুরম তবু কেন আদানির’
প্রশান্তের সঙ্গেই আদালত অবমাননা আইনের একটি ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আদালত অবমাননার জন্য ভূষণকে শাস্তি দেওয়া হল মাছি মারতে কুঠার চালানোর মতো। আমার মনে হয় না সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা এত দুর্বল যে ২৫০ শব্দের একটি বক্তব্যে তা নষ্ট হয়ে যাবে।’’ কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঙভির মতে, ‘‘এই রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে মন্তব্যগুলি করা হয়েছে সেগুলি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ যাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিরাও রয়েছেন।''
আরও পড়ুন: সুশান্ত-আবেগ উস্কে দিতেই বিহারে দেবেন্দ্র