—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মণিপুরের গোষ্ঠীহিংসা নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর এবং পক্ষপাতদুষ্ট’ খবর প্রচারের অভিযোগে ‘এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া’ (ইজিআই)-র সভাপতি এবং তিন সদস্যের বিরুদ্ধে কেন মণিপুর দু’টি এফআইআর দায়ের করল, তা নিয়ে সোমবার প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বধীন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ইজিআই-এর তথ্যসন্ধানী দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যায় কি না, তা বিবেচনার বিষয় হতে পারে।
তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই বিবেচনার ভার নেওয়ার কথা বলেনি। বরং প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ, ইজিআই-এর চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর খারিজের আবেদন বিচারের জন্য দিল্লি হাই কোর্টে পাঠানো যায় কি না, সে বিষয়ে মণিপুর সরকারের মত জানতে চেয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, এফআইআর দায়ের করলেও চার ইজিআই-কর্তাকে মণিপুর পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট গিল্ডের সভাপতি সীমা মুস্তাফা এবং অন্য অভিযুক্তদের রক্ষাকবচের সময়সীমা ১৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) পর্যন্ত বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে।
প্রসঙ্গত, ইজিআই-এর তথ্যসন্ধানী দল মণিপুরে গিয়ে একটি অগ্নিদগ্ধ বাড়ির ছবি প্রকাশ করে সেটিকে ‘কুকিদের বাড়ি’ বলে চিহ্নিত করেছিল বলে অভিযোগ। মণিপুর পুলিশের দাবি, তদন্তে প্রমাণিত হয় সেটি মণিপুরের বন দফতরের কার্যালয়। এর পরেই ‘ভুল ছবি’ ব্যবহার নিয়ে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল গিল্ডের তরফে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ সোমবার এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি গিল্ডের ওই চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও দায়ের করা হয়েছিল গত অগস্টে।
মণিপুর সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল গিল্ড। গত বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছিল সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত অভিযুক্ত চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। ওই সময়সীমার মধ্যে এফআইআর দায়েরের কারণ জানানোর জন্য মণিপুর সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে, মণিপুরে ইন্টারনেটের উপর বিধিনিষেধের সমালোচনা করেছিল এডিটরস গিল্ড। এই ঘটনাকে ‘সংবাদমাধ্যমের জন্য ক্ষতিকর’ বলেও জানিয়েছিল তারা। সূত্রের খবর, ওই প্রতিবেদনের কারণেই সংস্থার চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ইজিআই-এর সভাপতি এবং তিন সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের বিরুদ্ধে ‘প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’ এবং ‘ইন্ডিয়ান উইমেন প্রেস কোর’ ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে।