ব্রিটিশ সম্প্রচারকারী সংস্থা বিবিসি-র উপর এ দেশে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেছিলেন হিন্দুসেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত। —ফাইল চিত্র।
গুজরাতে নরেন্দ্র মোদী জমানায় গোধরাকাণ্ড নিয়ে ‘বিতর্কিত’ তথ্যচিত্রের জন্য দেশে বিবিসি-র সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞার আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘কট্টরপন্থী’ সংগঠনের হিন্দুসেনার জনস্বার্থ মামলায় রায়দানের সময় শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই তথ্যচিত্রটি নিয়ে ‘সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা’ পোষণ করছেন আবেদনকারী।
শুক্রবার এই আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি এমএম সুন্দের্শের বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘একটি তথ্যচিত্র কী ভাবে দেশকে প্রভাবিত করতে পারে?’
‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন’ নামে বিবিসি-র ওই তথ্যচিত্রটি এ দেশে সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। ১ ঘণ্টা করে দু’পর্বের ওই তথ্যচিত্রে ২০০২ সালে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীর জমানায় গোধরাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসায় আলোকপাত করা হয়েছে। যা নিয়ে দেশে-বিদেশে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ বলেও তকমা দেওয়া হয়েছে। টুইটার এবং ইউটিউবের মতো সমাজমাধ্যমে তথ্যচিত্রটির লিঙ্ক ‘ব্লক’ করার নির্দেশও দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও বিরোধীদের দাবি, তথ্যচিত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মোদী সরকার ‘সেন্সরশিপ’-এর নিদর্শন দিয়েছে।
তথ্যচিত্রটির পাশাপাশি, এর ব্রিটিশ সম্প্রচারকারী সংস্থা বিবিসি-র উপর এ দেশে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেছিলেন হিন্দুসেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত। তাঁর তরফে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা রুজু করেন আইনজীবী বরুণকুমার সিংহ। আবেদনকারীদের তরফে তাঁদের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দের আদালতে দাবি, ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে দেশের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত’ করার জন্যই এ ধরনের তথ্যচিত্রের নির্মাণ করা হয়েছে। এর পিছনে কী ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে, তা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে তদন্ত করানোর আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও আবেদনকারীদের এই আর্জি খারিজ করে দিয়ে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘এই আর্জিটিই ভ্রান্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে করা। কী ভাবে এ ধরনের নির্দেশ দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট?’’