হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশ আপাতত মুলতুবি রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের যাবতীয় নির্দেশ আপাতত মুলতুবি রাখল সুপ্রিম কোর্ট। তবে চাকরিচ্যুতদের এখনই চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। পরবর্তী শুনানিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাকরি হারানো কর্মীদের আবেদনের শুনানি ছিল। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, হাই কোর্ট নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যত চাকরি এখনও পর্যন্ত বাতিল করেছে, তা মুলতুবি রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের চাকরি আপাতত বাতিল হচ্ছে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাঁরা চাকরি এখনই ফিরে পাচ্ছেন। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে সকল কর্মীকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৬ এপ্রিল। পরবর্তী শুনানির দিন কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বাগ কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। বাগ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই চাকরি বাতিল করা শুরু হয়েছিল উচ্চ আদালতে। ওই রিপোর্টে কী কী বলা হয়েছে, তা এ বার খতিয়ে দেখতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।
কী ভাবে বাংলায় সরকারি চাকরির নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, কী ভাবে উত্তরপত্রের মাধ্যমে অবলীলায় কারচুপি চলেছে, বুধবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে তা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) প্রধান অশ্বিন শেণভি। তার পরেই বাগ কমিটির রিপোর্ট দেখতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ। ওই রিপোর্ট দেখার পর চাকরিচ্যুতদের চাকরি ফেরানো উচিত হবে কি না, হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে শীর্ষ আদালত।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে কর্মীদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিচ্যুতরা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছিল। তার পর সুপ্রিম কোর্টে চাকরি বহাল রাখার আবেদন জানান কর্মীরা। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার হাই কোর্টের নির্দেশ আপাতত মুলতুবি রাখল শীর্ষ আদালত।