এত দিন এই আইনমাফিক আইনভঙ্গকারীকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা বা উভয়ই দেওয়ার বিধান ছিল। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বেনামি লেনদেনের ‘অপরাধে’ শাস্তি বিধান করত যে ভারতীয় আইন, তাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করল দেশের শীর্ষ আদালত। ফলে বেনামি সম্পত্তির লেনদেনের অভিযোগে অভিযুক্ত আর ওই আইনে সাজা পাবেন না। জেল হবে না অপরাধীর, হবে না জরিমানাও।
ভারতীয় সংবিধানের এ সংক্রান্ত আইনটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। যে আইনে এই ধরনের অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হত সেটি ১৯৮৮ সালের বেনামি লেনদেন (প্রতিরোধ) আইনের ৩(২) ধারা। মঙ্গলবার এই ধারাটিকেই অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এত দিন এই আইনমাফিক আইনভঙ্গকারীকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা বা উভয়ই দেওয়ার বিধান ছিল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এমভি রামানার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেন, আইনটি ভারতীয় সংবিধানের ২০(১) অনুচ্ছেদের বিরোধী এবং স্পষ্টতই অযৌক্তিক।
কলকাতা হাই কোর্টের একটি রায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের একটি মামলার শুনানিতেই এই মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। ‘কেন্দ্র বনাম মেজার্স গণপতি ডিলকম প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের ওই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের বেনামি লেনদেন প্রতিরোধ সংশোধনী আইনটিকে ‘ভবিষ্যনির্ভর’ বলে মন্তব্য করেছিল। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রমনা, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে।
মামলাটির শোনার পরই শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের পক্ষেই রায় দেয়। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ১৯৮৮ সালের বেনামি লেনদেন প্রতিরোধ আইনের ৩(২) ধারা অসাংবিধানিক তো বটেই, এ সংক্রান্ত ২০১৬ সালের সংশোধনী আইনটিও অসাংবিধানিক।