প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই আবার পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ওই কলেজিয়াম বুধবার দেশের বিভিন্ন হাই কোর্টের বিচারপতি পদে ১৩ জন আইনজীবীর নাম সুপারিশ করেছে। সেই তালিকায় উল্লেখ্যযোগ্য, গুয়াহাটি হাই কোর্টের বিচারপতি পদে উন্নিকৃষ্ণন নায়ার এবং কৌশিক গোস্বামীর নাম।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছাড়াও কলেজিয়ামে রয়েছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। গত বছর খানেক ধরেই বিচারপতি পদে সুপারিশ করা নাম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার উপরে কয়েক মাস আগে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থার ‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাঁকে ভর্ৎসনা করেছিল শীর্ষ আদালত। ঘটনাচক্রে, এর পরেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী পদ থেকে রিজিজুকে সরিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই পরিস্থিতিতে কলেজিয়ামের সুপারিশ মানা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার টালবাহানা করে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। গত মাসেই বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের শ্লথতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বিচারপতি সঞ্জয় কউল এবং বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়াকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। জানিয়েছিল, দেশের বিভিন্ন হাই কোর্ট থেকে বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য ৮০টি নাম পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। কিন্তু গত ১০ মাস ধরে সেই তালিকা নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইন মন্ত্রক অনুমোদন দেয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টগুলির বিচারপতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে দু’দশকের কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছিল। বিকল্প হিসাবে জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এই উদ্দেশ্যে সংসদ এবং ১৬টি রাজ্যের বিধানসভায় বিলও পাশ করানো হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এনজেএসি গড়ার ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে কলেজিয়াম প্রথাই বহাল রাখার রায় দিয়েছিল। তার পর থেকেই মোদী সরকারে বিরুদ্ধে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে গয়ংগচ্ছ মনোভাবের অভিযোগ উঠেছে বারে বারে।