অরুণাচল প্রদেশে নাবাম টুকি সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে শুধু ক্রমক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেসের মুখেই হাসি ফোটাল তা নয়, এই দেশের বহুস্তম্ভনির্ভর গণতন্ত্রের শক্তিটিকেও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করল। এই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিভিন্ন ফোরামে গণতন্ত্রের চীরহরণের চেষ্টার মত্ত উল্লাসই যখন পরিচিত ছবি হয়ে উঠছে, তখন উত্তর-পূর্ব প্রান্তের এক রাজ্যকে ঘিরে সর্বোচ্চ আদালত স্বস্তির জানলা খুলে দিল, তা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয়।
কাকতালীয় হতে পারে, উত্তর-পূর্বের ওই জানলা দিয়ে আসা সূর্যের প্রথম কিরণ পড়ার কথা অমিত শাহের মুখে। কংগ্রেসমুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত গড়ার লক্ষ্যে গুয়াহাটিতে এক মহা সম্মেলন করছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি। যুদ্ধাঙ্গনকে প্রতিপক্ষহীন করার স্বপ্ন কেউ দেখতেই পারেন, কিন্তু তা হওয়া উচিত গণতান্ত্রিক শর্ত মেনেই, এই সহজ কথাটি ভুললেই পরিসরের দখল নিয়ে নেয় জবরদস্তি নামে অগণতান্ত্রিক একটি বিষয়, ইদানীং যার চর্চা রাজনৈতিক স্তরে বেশ নৈমিত্তিক।
ভরসার কথা, এখনও এই গণতন্ত্রে অন্যান্য স্তম্ভের ভারসাম্যরক্ষাকারী ভূমিকা সক্রিয়ই আছে। অতএব দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসনের দুর্দম ইচ্ছাকে অবলীলায় নাকচ করা সম্ভব হয়। শুভের জয় হয়।
সূর্যের প্রথম কিরণে মুখ পোড়ার কথা নয়। কিন্তু এই ঘটনায় বিজেপি-র মুখ পুড়েছে। লোকসভার কিছু সংখ্যার পরেও গণতন্ত্র তার অনেক শর্ত বিস্তার করে রেখেছে, এটা বিজেপি যত তাড়াতাড়ি বুঝবে, ততই মঙ্গল। অন্যথায় বিবাদ। এই দেশ কিন্তু তার প্রমাণ বারংবার দিয়েছে।