—ফাইল চিত্র।
আত্মসমর্পণের জন্য বাড়তি সময় চেয়েছিলেন গুজরাত হিংসায় খুন ও গণধর্ষণকাণ্ডের অপরাধীরা। তাঁদের সেই আর্জি শুক্রবার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, দু’দিনের মধ্যে অর্থাৎ রবিবারের মধ্যেই ১১ জন অপরাধীকে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সংবাদমাধ্যম ‘লাইভ ল’ দাবি করেছে, অপরাধীদের আবেদনে কোনও যৌক্তিকতা নেই, এই যুক্তিতে তা খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওই ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, তা এক্তিয়ার-বহির্ভূত। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ ছিল, জালিয়াতি করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কারণ ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ারই ছিল না গুজরাত সরকারের। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় যে, খুন এবং ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকেই দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলে ফিরে যেতে হবে। আত্মসমর্পণ করতে হবে তাঁদের। এর পরেই তাঁদের কয়েক জন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে জানান, আত্মসমর্পণ করার জন্য তাঁদের আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক। কেউ জানান, তিনি অসুস্থ। কেউ আবার ছেলের বিয়ের কারণ দেখান। একজন শীতে ফসল কাটতে যাবেন বলেও জানিয়েছিলেন আদালতে। অপরাধীদের সেই আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও বাড়তি সময় দেওয়া হবে না তাঁদের। নির্ধারিত দিনেই তাঁদের জেলে ফিরতে হবে।
২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে খুন এবং গণধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে জেলে ‘ভাল আচরণ’ করার যুক্তি দিয়ে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ওই অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করে। এর পরই ১১ জনকে ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্রও মেলে। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ১১ জনের মুক্তির পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাধে।