সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
কোনও মহিলাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারায় ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত করা যায় কি না, তা বিবেচনা করতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট। ৬২ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা শীর্ষ আদালতে আবেদনে জানিয়েছেন, তাঁকে ইচ্ছে করে ভুয়ো ধর্ষণের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সেই মামলাতেই এই প্রশ্ন উঠেছে।
বৃদ্ধা জানিয়েছেন, এক মহিলার সঙ্গে তাঁর আমেরিকাবাসী বড় ছেলের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। কিছু দিন পরে বড় ছেলে ‘ভয়েস কলের’ মাধ্যমে ওই মহিলাকে ‘বিয়ে’ করেন। তাঁর সঙ্গে ওই মহিলার মুখোমুখি সাক্ষাৎই হয়নি। পরে ওই মহিলা তাঁদের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর বিদেশবাসী ছোট ছেলে দেশে ফিরে আসেন।
বৃদ্ধা জানিয়েছেন, এর পরে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা বড় ছেলে এবং ওই মহিলার মধ্যে ‘বিয়ে’র সম্পর্ক শেষ করার জন্য চাপ দেন। তার পরে পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই মহিলা সম্পর্ক শেষ করতে রাজি হন। লিখিত চুক্তি অনুযায়ী তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
কিন্তু সেই চুক্তির কয়েক সপ্তাহ পরেই ওই মহিলা তাঁর ও তাঁর ছোট ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, জোর করে আটকে রাখা ও ভীতি প্রদর্শনের মামলা করেন। পঞ্জাবের নিম্ন আদালত এবং পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট বিধবার আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
অভিযোগকারিণীর অবশ্য দাবি, তিন বছরের সম্পর্কের পরে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ওই বৃদ্ধার বড় ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হন। কারণ, তিনি অন্য কাউকে বিয়ে করলে বৃদ্ধার বড় ছেলে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন। তাঁর আরও দাবি, বৃদ্ধার বড় ছেলেই তাঁকে তাঁদের বাড়িতে থাকতে বলেন। জানান, পরে আমেরিকা থেকে এসে বৈধ ভাবে তাঁকে বিয়ে করবেন। অভিযোগকারিণীর দাবি, বৃদ্ধার ছোট ছেলেকে বিয়ে করতে তাঁকে চাপ দিতে থাকেন বৃদ্ধা ও ছোট ছেলে। তিনি রাজি না হওয়ায় ছোট ছেলের সঙ্গে তাঁকে এক ঘরে বন্ধ করে দেন ওই বৃদ্ধা। সেখানে ছোট ছেলে তাঁকে ধর্ষণ করেন ও অশ্লীল ছবি তোলেন।
সুপ্রিম কোর্টে বিধবার আইনজীবী বলেন, ৩৭৫ নম্বর ধারায় কোনও মহিলার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যায় না। বিচারপতি হৃষীকেশ রায় ও বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চও জানায়, এই মামলায় এক জন পুরুষকে অভিযুক্ত করা যায় বলেই তাঁরা জানেন। এর পরেই জামিনের আর্জির শুনানি স্থগিত রেখে বিষয়টি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট জানায় মহিলা ধর্ষণ করতে পারেন না। তবে গণধর্ষণের ঘটনায় কোনও মহিলা সাহায্য করলে ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশোধিত ধারায় তাঁর বিচার হতে পারে।