গত ১৫ এপ্রিল খুন হন আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফ। ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ এবং বিধায়ক তথা ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ হত্যা মামলার অভিযোগ গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল এই মামলার শুনানির দিন স্থির করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে যে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক ১৮৩টি এনকাউন্টারের মামলায়। এ ছাড়াও পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন কী ভাবে আতি এবং আশরফের মৃত্যু হল সে বিষয়েও তদন্ত করা হোক।” আরও বলা হয়েছে যে, পুলিশের এই ধরনের পদক্ষেপ গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। গণতান্ত্রিক সমাজে পুলিশকে চূড়ান্ত বিচারের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না।শাস্তির বিষয়টি বিচারবিভাগের অধীনেই থাকা উচিত।
গত ১৫ এপ্রিল রাতে প্রয়াগরাজ হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফকে। হাসপাতালে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই ভাই। পুলিশের ঘেরাটোপে থেকে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। সেই ভিড়েই সাংবাদিক সেজে হাজির ছিল তিন আততায়ী। সুযোগ পেয়ে পুলিশের সেই নিরাপত্তার বলয় টপকে আতিক এবং আশরফের মাথায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর পর গুলি করে। তার পর আত্মসমর্পণ করে তিন দুষ্কৃতীই।
আতিক এবং আশরফের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এত পুলিশি নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে দুই ভাইকে কী ভাবে গুলি করে মারল আততায়ীরা। এর নেপথ্যে বড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও জোর জল্পনা চলছে। একই সঙ্গে, কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে জড়িয়ে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসন পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে।
আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফ যে দিন খুন হন, তার ৪৮ ঘণ্টা আগেই ঝাঁসিতে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছিল আতিকের তৃতীয় পুত্র আসাদের। ওই একই ঘটনায় ‘এনকাউন্টারে’ নিহত হয়েছিলেন আসাদের সঙ্গী গুলামও। আসাদের মৃত্যুর খবর আদালতেই পেয়েছিলেন আতিক। পুত্রের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। আসাদের শেষকৃত্যে যাওয়ার জন্য আবেদনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়। তিনি যে ‘এনকাউন্টারে’ মারা যেতে পারেন, এ নিয়ে আদালতেও আশঙ্কা প্রকাশ করে নিরাপত্তার আবেদন করেছিলেন আতিক।