Sukhendu Sekhar Roy

পিএসি বৈঠকে বাংলার রেল নিয়ে সরব সুখেন্দু

বৈঠকে উপস্থিত রেল বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান সতীশ কুমার ট্রেনের গতি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে দাবি করলেও সৌগত রায়, তিরুচি শিবার সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে সুখেন্দুশেখর তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছেন বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল ছবি।

রেল পরিষেবার বিভিন্ন বিষয়ে ২০২১ সালের সিএজি রিপোর্ট (২২ নম্বর) নিয়ে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস্ কমিটি (পিএসি)-র বৈঠকে বিরোধী সাংসদেরা আজ সমালোচনায় সরব হয়ে উঠলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিরোধী সাংসদদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বাংলার স্বার্থ নিয়ে সরকারকে আক্রমণ করলেন সবচেয়ে বেশি।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত এক মাস আর জি কর কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিত তৃণমূলের দলীয় অবস্থানের বিপরীতে হাঁটতে দেখা গিয়েছে সুখেন্দুশেখরকে। তিনি নাম করে তৃণমূলের বিরোধিতা করেননি ঠিকই, কিন্তু বার বার বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় তাঁর অসন্তোষের কথা। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ আন্দোলনও করেছেন নিজের মতো করে।

আজ বৈঠকে উপস্থিত রেল বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান সতীশ কুমার ট্রেনের গতি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে দাবি করলেও সৌগত রায়, তিরুচি শিবার সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে সুখেন্দুশেখর তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছেন বলে সূত্রের খবর। অডিট রিপোর্টের তথ্যে বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে, গোটা দেশের মধ্যে ব্যস্ততম দিল্লি-হাওড়া রুটেই ট্রেন চলাচলে বিলম্ব হয় সবচেয়ে বেশি। যাত্রিবাহী ট্রেনের গড়পড়তা গতি ঘণ্টায় ৬০.৯ কিলোমিটার, মালগাড়ির ক্ষেত্রে তা ঘণ্টায় ২৩.৯ কিলোমিটার। ফলে দিল্লি-হাওড়া ট্রেনের যাত্রায় সময় লাগে গড়ে ২৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট, মালগাড়ির লাগে ৬১ ঘণ্টা। একমাত্র ব্যতিক্রম রাজধানী এক্সপ্রেস, যার সময় লাগে ১৭ ঘন্টা।

Advertisement

রেল মন্ত্রক সুনির্দিষ্ট সময়ে পণ্য পৌঁছনোর কোনও গ্যারান্টি দেয় না। রিপোর্ট বলছে, এমন অনিশ্চয়তার জন্য সড়ক ও জলপথে মাল সরবরাহ বেড়েছে।

অন্য দিকে, রেল মন্ত্রক মালগাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে রাজস্ব হারাচ্ছে। বিলম্বিত রেল চলাচলই এর মূল কারণ। অথচ গত এক দশকে শুধুমাত্র রেললাইনের উন্নয়নে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা সরকার খরচ করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শাসক দলের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে, অনুরাগ ঠাকুরও বিরোধী পক্ষের সৌগত রায়, তিরুচি শিবা ও সুখেন্দুশেখর রায়ের সঙ্গেই স্বর মিলিয়েই ট্রেনের বিলম্ব নিয়ে প্রশ্ন করেন চেয়ারম্যানকে। কংগ্রেসও কমিটির সামনে এই বিলম্ব সংক্রান্ত রিপোর্ট দাবি করেছে। সূত্রের খবর, সৌগত বলেছেন, বন্দে ভারতের মতো বেশি ভাড়ার ট্রেনের জন্য অল্প ভাড়ার ট্রেনগুলি অসুবিধায় পড়ছে।

সূত্রের খবর, পূর্বাঞ্চলের বিশেষ পণ্যবাহী রেল করিডর সম্পর্কে অডিট রিপোর্টে বলা হয়েছে, পঞ্জাবের জালন্ধর থেকে বিহারের শোননগর, গোমো হয়ে বাংলার ডানকুনি পর্যন্ত এই দীর্ঘ করিডর সম্পূর্ণ হলে রেলের মোট যা আয় হত, তার ১৩ শতাংশ শুধুমাত্র শোননগর-ডানকুনি রুট থেকেই আসত। কারণ, এই অঞ্চলের কয়লা, ইস্পাত, আকরিক লোহা ও অন্যান্য খনিজ পণ্যের সহজলভ্যতা।

সূত্রে জানা গিয়েছে, অডিট রিপোর্টের এই অংশটি তুলে ধরে সুখেন্দুশেখর প্রশ্ন তুলেছেন, জালন্ধর থেকে শোননগর পর্যন্ত করিডরের কাজ শেষ হয়েছে। অথচ, গত ১৬ বছরেও শোননগর-ডানকুনির কাজ কেন শুরু করা গেল না?

রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান সতীশ কুমার জানিয়েছেন, পিপিপি মডেল হওয়া সত্ত্বেও কোনও বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি। সুখেন্দুর পাল্টা বলেন, কোন কোন বছরে কত বার বিনিয়োগকারীর খোঁজ করে সংবাদমাধ্যমে নোটিস ছাপা হয়েছে? তার কপি কমিটিকে দেওয়া হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement