(বাঁ দিক থেকে) সুখেন্দুশেখর রায়, নরেন্দ্র মোদী এবং শতাব্দী রায়। —ফাইল চিত্র।
অমৃত নয়, আসলে ‘হলাহলের’ কালখণ্ড চলছে ভারতে।
আজ রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে ধন্যবাদজ্ঞাপক আলোচনায় এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নামে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে দেশের যুবদের। এই সংক্রান্ত কোনও পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে দিতে চাইছে না কেন্দ্র। তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, এই সরকার এসে আগের রাজনৈতিক ইতিহাসকে দুষছে, সব নাম বদলে দিচ্ছে। এমন একটা সময় আসবে, যখন এমন কেউ আসবে যারা মোদী সরকারেও নাম মুছে দেবে।
সুখেন্দুশেখরের আক্রমণ, ‘‘রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তৃতায় বলেছেন, গত বছর তাঁর সরকার লক্ষ লক্ষ চাকরি দিয়েছে মিশন মোড-এ। মনে করিয়ে দিতে চাই, এই সরকার ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, প্রতি বছর দু’কোটি করে চাকরি দেওয়ার। সেই হিসাবে গত দশ বছরে তো ২০ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার কথা। কিন্তু যখন বলা হচ্ছে লাখ লাখ, তখন প্রশ্ন হচ্ছে, কত জন বাকি থাকল চাকরি পেতে?’’ এর পরেই দণ্ডসংহিতা বিল পাশের প্রসঙ্গ তুলে সরকারকে বিঁধেছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় বলা হয়েছে, এই বিলটিকে গোটা সংসদ সমর্থন করেছিল। এটা ঠিক তথ্য নয়।’’ এই সঙ্গেই বিরোধী দলগুলির ১৪৬ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার কথা বলে হিটলারের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায়নের আইন সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে পাশ করাতে হিটলার কমিউনিস্ট পার্টির ৮১ জন সাংসদের সবাইকে ও সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের ১২০ জন সাংসদের মধ্যে ২৬ জনকে গ্রেফতার করে গ্যাস চেম্বারে পাঠিয়েছিলেন। আর এই ২০২৩ সালে ভারতে ১৪৬ জনকে সাসপেন্ড করা হল, যা যে কোনও দেশের সংসদেই সর্বোচ্চ।
আজ তাঁর বক্তৃতায় অক্সফ্যাম এবং ইউএনডিপি রিপোর্ট তুলে পৃথক পৃথক ভাবে সুখেন্দুশেখর দেখিয়েছেন, কতিপয় মানুষের হাতে রয়েছে দেশের অধিকাংশ সম্পদ। মোদী সরকারের যুক্তরাষ্ট্রীয় চলনকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার এসে বলেছিল, তারা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এখন আর সে কথা বলে না। সমস্ত অ-বিজেপি রাজ্যগুলির নেতাদের পিছনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দলিত মুখ্যমন্ত্রীকেও ছাড়া হচ্ছে না।’’ ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির তীব্র বিরোধিতা করে তাকে অসাংবিধানিক, যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী হিসাবে বর্ণনা করে সুখেন্দুশেখর বলেন, এই নীতি দেশকে প্রেসিডেন্ট-কেন্দ্রিক শাসনকাঠামোয় এগিয়ে দেবে। তৃণমূলের অন্য সাংসদ শতাব্দী রায় প্রশ্ন তোলেন দেশের বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, শিশুকন্যাদের নিরাপত্তা, কৃষক-সঙ্কট নিয়ে।